আমতলী প্রতিনিধি:
পটুয়াখালী-আমতলী মহাসড়কের আমড়াগাছিয়া খানকায়ে ছালেহিয়া কমপ্লেক্সের দক্ষিণ পাশে গাছের গুড়ি, সিমেন্টের স্লাব ফেলে সড়ক আটকে বিআরটিসি পরিবহন, ট্রাক, পিকআপ, নসিমন ও মোটর সাইকেলে গণ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাতদল দেশীয় অস্ত্র দিয়ে লোকজনকে পিটিয়ে তাদের সর্বস্ব নিয়ে গেছে। ডাকাতের অতর্কিত হামলায় অন্তত মহিলাসহ ৪০ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে নসিমন চালক জাকির হোসেনকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বিআরসিটি পরিবহনের সুপার ভাইজার শিপন শরীফ ও ট্রাক চালক হাফিজুর রহমান মোল্লাসহ অপর আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। ঘটনা ঘটেছে রবিবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানাগেছে, মহাসড়কের আমড়াগাছিয়া খানকায়ে ছালেহিয়া কমপ্লেক্সের দক্ষিণ পাশে রবিবার দিবাগত রাত দুই দিকে মুখে কালি মাখানো শটপ্যান্ট পরিহিত ১০/১২ জনের একটি ডাকাত দল গাছের গুড়ি ও সিমেন্টের ব্লক ফেলে সড়ক আটকে দেয়। পরে গোপালগঞ্জ থেকে খড়ি নিয়ে আসা একটি ট্রাক অবরোধ করে। ওই ট্রাকে থাকা চালক মোঃ হাফিজুর রহমান মোল্লাকে বেধরক মারধর করে। এরপরে যশোর থেকে ছেড়ে আসা বিআরটিসি পরিবহনে (ঢাকা মেট্রো-ব-১৫-৫৬৭৯),তিনটি ট্রাক, তিনটি পিকআপ, দুইটি নসিমন ও দুইটি মোটর সাইকেলের যাত্রী, চালক, সুপারভাইজার ও হেলপারকে বেধরক মারধর করে টাকা, স্বর্ণালংকার ও মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। পৌনে এক ঘন্টাব্যাপী তান্ডব চালিয়ে ডাকাতদল নিরাপদে চলে যায়। ডাকাতের হামলায় অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছে। পরে গাড়ীর লোকজন সড়ক থেকে গাছের গুড়ি ও সিমেন্টের স্লাব তুলে গাড়ী নিয়ে গন্তব্যে চলে যায়। খবর পেয়ে ওই রাতেই টহল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে। ডাকাতের মারধরে আহত নসিমন চালক জাকির হোসেনকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অপর আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। সোমবার সকালে বরগুনা জেলা অতিরিক্ত পুলিশ মোঃ তোফায়েল আহম্মেদ, ওসি আবুল বাশার ও ওসি তদন্ত মনোরঞ্জন মিস্ত্রি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, গভীর রাতে সড়কে ডাকচিৎকার শুনে আমরা হতভম্ব হয়ে যাই কিন্তু ভয়ে নামিনি। তারা আরো বলেন, গাড়ীর মধ্যে অনেক লোকের কান্নাকাটির শব্দ শুনেছি ।
ডাকাতির শিকার ট্রাক চালক মোঃ হাফিজুর রহমান মোল্লা বলেন, ট্রাকে পাট খরি নিয়ে আসতেছিলাম। পথিমধ্যে সড়কে এসে দেখি গাছের গুড়ি ও সিমেন্টের স্লাব ফেলা। গাড়ী থামানো মাত্রই মুখমন্ডলে কালোকালি মাখানো ও শট প্যান্ট পরিহিত ১০/১২ জনের ডাকাত দল আমাকে মারধর করে দুটি মোবাইল ফোন ও তিন হাজার টাকা নিয়ে যায়। এরপর থেকে যতগুলো গাড়ী এসেছে সকল গাড়ীর লোকজনকে মারধর করে টাকা, স্বর্ণালংকার ও মোবাইল ফোন নিয়ে গেছে। তিনি আরো বলেন, ডাকাতরা অন্তত ৩৫/৪০ জনকে মারধর করেছে।
আমতলী থানার ওসি মোঃ আবুল বাশার বলেন, এ ঘটনায় ৭-৮ জনকে অঞ্জাত আসামী করে আমতলী থানায় মামলা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে। বরগুনা জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ তোফায়েল আহম্মেদ বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।