আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি।
আমার মুত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। বাবা ও মা তোমরা আমাকে ক্ষমা করে দিও। আমি কাইয়ুমকে ভালোবাসি, আমাদের প্রেম খাটি ছিলো এমন সুইসাইড নোট লিখে রুমা (১৬) নামের দ্বাদশ শ্রেনী কলেজ এক ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। ঘটনা ঘটেছে শনিবার দুপুর ১ টার দিকে তালতলী উপজেলার শিকারীপাড়া গ্রামে। রুমা তালতলী সরকারী কলেজের দ্বাদশ শ্রেনীর ছাত্রী এবং উপজেলার শিকারীপাড়া গ্রামের আলাউদ্দিন মোল্লার মেয়ে। এ ঘটনার পর থেকে প্রেমিক কাইয়ুম পলাতক রয়েছে।
জানাগেছে, তালতলী সরকারী কলেজের দ্বাদশ শ্রেনীর ছাত্রী রুমা একই গ্রামের হাফিজুর রহমান হাওলাদারের পুত্র কাইয়ুমের সাথে দীর্ঘদিন ধরে প্রেম করে আসছিল। এ বিষয়টি পরিবারের লোকজন জানতে পেরে ওই ছেলের সাথে সম্পর্ক ভেঙ্গে দিতে চাপ দেয়। কিন্তু ওই ছেলেকে বিয়ে করতে অনড় রুমা। এদিকে তাকে বিয়ে দিতে পরিবারের লোকজন দিনক্ষণ ঠিক করে। শনিবার বিকেলে ছেলে দেখতে যাওয়ার কথা ছিল। পরিবারের এমন সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেনি রুমা। ওইদিন সকাল ১০ দিকে প্রাইভেট পড়া শেষে সে বাড়ীতে আসেন। ওই সময়ে বাবা ও মা ধান শুকানোর কাজে মাঠে ছিল। ওই সুযোগে একা ঘরে সুইসাইড নোট লিখে রুমা গলায় ওড়না পেচিয়ে ফাঁস দেয়। বাবা ও মা মাঠ থেকে ফিরে ঘরে দরজা বন্ধ দেখে মেয়েকে ডাকাডাকি করে কিন্তু কোন সাড়া শব্দ পাচ্ছে না। এমন মুহুর্তে দরজা ভেঙ্গে ঘরে উঠে। পরে তারা ঘরের দোতালায় রুমাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। পুলিশ ওই দিন বিকেলে তার মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য বরগুনা মর্গে প্রেরন করেছে।
মৃত্যুর আগে লেখা সুইসাইড নোটে ওই শিক্ষার্থী উল্লেখ করেছেন, আমার মুত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। বাবা ও মা তোমরা আমাকে ক্ষমা করে দিও। আমি কাইয়ুমকে ভালোবাসি, আমাদের প্রেম খাটি ছিলো। শুধু একদিন বাজার থেকে গাড়িতে করে বাড়িতে যাওয়ার সময় আমি কাইয়ুমের হাত ধরেছি। এছাড়া আমাদের ভিতরে আর কোনো সর্ম্পক হয়নি। ভালো থেকো বাবা আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, রুমা একই গ্রামের কাইয়ুম নামের একটি ছেলের সাথে প্রেম করে আসছিল। ওই ছেলের সাথে তাকে বিয়ে না দিয়ে অন্য ছেলের সাথে বিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। এতে অভিমান করে রুমা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
নিহত রুমার বাবা আলাউদ্দিন মোল্লা বলেন, গলায় ওড়না পেছিয়ে ঘরের আড়ার সাথে আত্মহত্যা করেন। কেন করেছে তা জানি না?
তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী শাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা মর্গে পাঠানো হয়েছে। ওই মেয়ের লেখা একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করা হয়।