সত্য প্রেম পবিত্রতার মহান আদর্শের বিদ্যাপীঠ সরকারি ব্রজমোহন কলেজ। প্রতিষ্ঠার পর থেকে শত বছর পেরিয়ে দখিনা জনপদের শ্রেষ্ঠ এ বিদ্যাপীঠ এক সময়ে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও মুক্তচিন্তার মননে অক্সফোর্ড অব বেঙ্গল নামে খ্যাত ছিল। সাবেক প্রয়াত অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ হানিফ স্যার কলেজের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করার সময় কলেজের সামনের পাঁচটি গেট ছাড়াও মহাত্মা অশ্বিনীকুমার হোস্টেল ও বৈদ্যাপাড়া সংলগ্ন কলেজের শিক্ষক কোয়াটার এলাকায় দুটি পকেট গেট খোলা রাখেন। দীর্ঘদিন এসব গেট কলেজের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও এলাকাবাসী কলেজে যাতায়াতের সুবিধার জন্য ব্যবহার করে আসছে। উল্লেখ্য কলেজের নতুন ক্যাম্পাসের ভুমি হুকুম দখলের পূর্বে কলেজের নতুন ক্যাম্পাসের মধ্য দিয়া একটা রাস্তা ছিল যেটি বর্তমান সিটি ম্যাপে ৮২৫ নম্বর দাগে এখনো বিদ্যমান রয়েছে।বিগত ২৮ মে ২০২২ তারিখে কলেজ প্রশাসন কলেজের নিরাপত্তার অজুহাতে পকেট গেট দুটি বন্ধ করে দেয়। এই গেট দুটি দিয়ে প্রতিদিন কলেজ রো, কলেজ এভিনিউ, গোরস্থান রোড, বৈদ্যপাড়া, সিএন্ডবি রোড কাজীপাড়া এলাকায় বিভিন্ন বাসা বাড়ি ও মেসে অবস্হানরত কয়েক হাজার শিক্ষার্থী নিরাপদে যাতায়াত করে এবং এসব এলাকায় বসবাসরত শিক্ষকেরা এই পথটি ব্যবহার করে থাকেন। তাছাড়া এসব এলাকায় বসবাসকারী ছাত্র ও এলাকাবাসী কলেজ ও হোস্টেলের দুটি জামে মসজিদে নিয়মিত নামাজ আদায় এবং খেলাধুলা করে থাকে। তাছাড়া কলেজ ক্যাম্পাসে অবস্হিত তিনটি আবাসিক হোস্টেলের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন কাজে এই পকেট গেট দুটি ব্যবহার করে থাকে। বর্তমানে কলেজ প্রশাসনের অবিবেচ্য সিদ্ধান্তে পকেট গেট বন্ধ করার কারনে কলেজের মুল ক্যাম্পাসে পরীক্ষা ও ক্লাস চলাকালে আবাসিক ছাত্র, আবাসিক শিক্ষক এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা এই পথ ব্যবহার করতো এখন যাতায়াতের বিকল্প কোন পথ না থাকায় অবরুদ্ধ হয়ে পরবে। যাতায়াত করতে গেলে পরীক্ষা সহ কলেজের একাডেমিক কার্যক্রম বিঘ্নিত হবে। তাছাড়া কলেজ ক্যাম্পাসের তিনদিকে অবস্হানকারী কয়েক হাজার শিক্ষার্থী এত নিরাপদে যাতায়াত করতো এখন ক্যাম্পাসে যাতায়াতের ক্ষেত্রে ঘুরপথে আসতে হবে ফলে বহিরাগতদের হয়রানি ও চুরি ছিনতাইয়ের কবলে পরবে। তাছাড়া মহাত্মা অশ্বিনী কুমার হলসহ অন্য দুটি আবাসিক হলের ছাত্ররা খুব স্বল্প মূল্যে কলেজের পিছনে খাবার খেতে পারতো যেটি বর্তমানে সম্ভব হচ্ছেনা। পকেট গেট বন্ধ হওয়ায় আবসিক শিক্ষার্থী, শিক্ষক সহ ক্যাম্পাসের আশেপাশের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।
কলেজ প্রশাসন বহিরাগত নিয়ন্ত্রণের জন্য পকেট গেট বন্ধের পদক্ষেপ গ্রহন করেছে অথচ হাজার হাজার শিক্ষার্থীর কাছে দৃশ্যমান কলেজে বহিরাগত কারা? তারা কাদের ছত্রছায়ায় চলে? বহিরাগতরা প্রতিদিন ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় কলেজ মুল গেট দিয়ে বাইক নিয়ে মহড়া দিয়ে ঢুকে কলেজ দাপিয়ে বেড়ায় তারা কেউ পকেট গেট দিয়ে আসেনা। তাছাড়া সরকারি ব্রজমোহন কলেজ যে মাদকের আসর বসে সেটি কারা করেছে তা সবাই অবশ্যই অবগত। কলেজ প্রশাসন বহিরাগত নিয়ন্ত্রনের নামে পকেট গেট বন্ধ করে কয়েকহাজার শিক্ষার্থীকে বহিরাগতদের নিয়ন্ত্রণে ছেড়ে বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রী ব্রজমোহন কলেজ শাখা বরাবরই কলেজ প্রশাসন কে বহিরাগত নিয়ন্ত্রণে দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহন করতে জানিয়ে এসেছিলো যেটি শিক্ষার্থী বান্ধব পদক্ষেপ হবে। পকেট গেট বন্ধে করলেও সম্মুখের গেট দিয়ে মোটরসাইকেল ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। বিশেষ করে সকাল এবং সন্ধ্যায় মাদকসেবিদের আসর বসে বিশেষ কিছু জায়গায়।
কলেজ প্রশাসনের কাছে জোড় দাবি জানাচ্ছি কলেজের আবাসিক এবং ক্যাম্পাস সংলগ্ন এলাকায় বসবাসকারী অনাবাসিক ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে পকেট গেট দুটি যেন খুলে দেওয়া হয়। আশাকরি কলেজ প্রশাসন কারও ক্রীড়ানক না হয়ে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে দ্রুত এব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহন করবে।
এবিষয় জরুরী পদক্ষেপ দৃশ্যমান না হলে বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রী সাধারন শিক্ষার্থিদের সাথে নিয়ে আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবে।