বিনোদন ডেস্ক :
পৃথিবীর সর্বত্রই মশার বিচরণ। এমনকি আর্কটিকার মতো ঠান্ডা জায়গাতেও এদের দেখা মেলে। এদিকে মশারও রয়েছে পুরুষ-স্ত্রী ভিন্ন জাত! রয়েছে ভিন্ন জীবনধারা…পুরুষ মশা গাছের ফুলের মধু, ফলের রস বা গাছের মিষ্টি নির্যাস খেয়ে জীবন ধারণ করে। তবে স্ত্রী মশা এর পাশাপাশি পান করে মানুষ বা প্রাণীর রক্ত। ডিম উৎপাদনের জন্যই এদের রক্তের প্রয়োজন হয়।
এছাড়া দূরে থেকে বা অন্ধকারে মানুষকে খুঁজে পাওয়ার জন্য কিছু বাড়তি ক্ষমতা রয়েছে স্ত্রী মশাদের। মানুষের শরীরের তাপ, ঘাম এবং নিঃশ্বাসের কার্বনডাইঅক্সাইডকে এরা নিশানা হিসেবে ব্যবহার করে। এসব শনাক্তের জন্য মশাদের রয়েছে সংবেদনশীল শুঁড় বা অ্যান্টেনা। অ্যান্টেনাতে মশাদের ঘ্রাণেন্দ্রিয়, তাপ ইন্দ্রিয়, শ্রবণ ইন্দ্রিয় থাকে। তাছাড়া মশারা চোখে দেখেও মানুষের কাছাকাছি পৌঁছে যেতে পারে। সাম্প্রতিক একটি গবেষণা থেকে জানা যায়, মশার অ্যান্টেনাতে বিশেষ একধরনের অলফ্যাক্টরি রিসেপ্টর বা ঘ্রাণের সংবেদন রয়েছে। যা দিয়ে এটি ঘামের রাসায়নিক উপাদান শনাক্ত করে মানুষকে সহজেই খুঁজে পায়।
ষাটের দশকে বিজ্ঞানীরা শুধু জানতেন, মানুষের দেহের ঘাম এবং নিঃসৃত ল্যাকটিক অ্যাসিড মশাকে আকৃষ্ট করে। কিন্তু কীভাবে এগুলি মশার দেহে সংবেদনশীল হয়, তা জানা ছিল না। প্রায় চার দশক ধরে ধরে বিজ্ঞানীরা এই প্রক্রিয়াটির সন্ধান করেছেন। বিজ্ঞানীরা মশার দেহের এই বিশেষ অলফ্যাক্টরি রিসেপ্টরটি শনাক্ত করে ফেলেছেন যা মানুষের ঘামের গন্ধ চিহ্নিত করতে দায়ী। এ রিসেপ্টরটি আয়োনোট্রপিক রিসেপ্টর নামে পরিচিত।
এদিকে ত্রিশ ফুটের বেশি দূর মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাস নিঃসৃত কার্বন-ডাই-অক্সাইডের অস্তিত্বও বুঝতে পারে মশা। এই গন্ধ অনুসরণ করে এবং খুব কাছাকাছি এলে মানুষের শরীরের ঘাম এবং তাপও শনাক্ত করতে পারে। এরপর এটি মানুষের শরীরে বসে, চামড়ার ওপরে একটি উপযুক্ত স্থান বাছাই করে এবং বিশেষ সূচ ঢুকিয়ে রক্ত শুষে নেয়।