আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
ফ্লাইং কার বা উড়ন্ত গাড়ি৷ এতদিন তার কথা আলোচনা হয়েছে শুধু কল্পবিজ্ঞানে। গল্পের বইয়ের পাতা আর সিনেমার পর্দা ছেড়ে এবার বাস্তবে হাজির। শুধু হাজিরই নয়, জনসমক্ষে রীতিমতো উড়ে দেখাল সেই উড়ন্ত গাড়ি।
অনেকটা বড় ড্রোনের মতো দেখতে চীনা বৈদ্যুতিন গাড়ি নির্মাতা কোম্পানি এক্সপেং আইএনসির তৈরি সেই গাড়ি গত সোমবার (১০ অক্টোবর) সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে প্রথমবারের মতো আকাশে ওড়ে৷
পেট্রোল, ডিজেল, সিএনজি ও ইলেকট্রিক গাড়ির ধারাবাহিকতায় বেশ কিছুদিন ধরেই ফ্লাইং কার বা উড়ন্ত গাড়ি তৈরির চেষ্টা করছে গাড়ি নির্মাতা কোম্পানিগুলো। এ ক্ষেত্রে সফলতা দেখিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, সুইডেন, চীনসহ বেশ কয়েকটি দেশ। এমনকি বাজারেও আসতে শুরু করেছে উড়ন্ত গাড়ি।
চীনের তৈরি উড়ন্ত গাড়িটির নাম ‘এক্স টু’। দুই আসনের এ বৈদ্যুতিক গাড়িটি উল্লম্বভাবে মাটি থেকে ওপরে ওঠে৷ অবতরণের সময়ও উল্লম্বভাবেই নামে। এর চার কোনায় দুটি করে মোট আটটি প্রপেলার তথা পাখা রয়েছে৷
গত সোমবার দুবাইয়ের আকাশে প্রথমবারের পরীক্ষামূলক উড্ডয়নে মোট ৯০ মিনিট ওড়ে এটি। এটাকে বড় সফলতা হিসেবে দেখছেন সংস্থার কর্তারা। তাদের আশা, পরবর্তী প্রজন্মের কাছে এই উড়ন্ত গাড়ি খুবই জনপ্রিয় হবে।
গাড়িটি খুব শিগগিরই আন্তর্জাতিক বাজারে আনার জন্য কাজ করছে এক্সপেং। তবে এ ক্ষেত্রে কোম্পানিটি খুব একটা তাড়াহুড়ো করতে চায় না। কর্তৃপক্ষ বলছে, ধাপে ধাপে আন্তর্জাতিক বাজারে আত্মপ্রকাশ করতে চায় তারা।
এক্সপেং অ্যারোএইচটির মহাব্যবস্থাপক মিঙ্গুয়ান কিউ বলেন, ‘আমরা আন্তর্জাতিক বাজারে আস্তে আস্তে প্রবেশ করতে চাচ্ছি। প্রথমে দুবাইকে বেছে নেয়া হয়েছে। কারণ, দুবাই বিশ্বের সবচেয়ে উদ্ভাবনক্ষম শহর।’
এর আগে ২০২১ সালের অক্টোবরে ফ্লাইং কার উদ্বোধন করেছে সুইডেন। দেশটির গাড়ি নির্মাতা কোম্পানি জেটসন অ্যারোর এ উড়ুক্কু গাড়ির নাম ‘জেটসন ওয়ান’। একটি মাত্র আসন রয়েছে এ গাড়িতে।
তবে খুব বেশি সময় নয়, একবারে মাত্র ২০ মিনিট উড়তে পারে এই ফ্লাইং কার। এর সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ৬৩ মাইল। গাড়িটি এরই মধ্যে বিক্রি শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১২টি গাড়ি বিক্রি করেছে জেটসন অ্যারো।
ফ্লাইং কার তৈরি করেছে যুক্তরাষ্ট্রও। স্যামসন স্কাইর তৈরি গাড়ির নাম ‘সুইচব্লেড’। এ গাড়িটিও বিক্রি শুরু হয়েছে। এর িমধ্যে প্রায় দুই হাজার মানুষ গাড়ির জন্য বুকিং করেছে। স্যামসন স্কাই গাড়িটি তৈরি করতে ১৪ বছর সময় ব্যয় করেছে। সম্প্রতি গাড়িটি পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন সম্পন্ন করেছে। এর গতি ঘণ্টায় ৮৭ কিলোমিটার।