আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
এবার পরমাণু হামলার মহড়া শুরু করল রুশ বাহিনী। স্থানীয় সময় বুধবার (২৬ অক্টোবর) রাশিয়ার পরমাণু অস্ত্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত বাহিনী ‘নিউক্লিয়ার স্ট্র্যাটেজিক ফোর্স’ এই মহড়া চালিয়েছে। সে দেশের সরকারি সংবাদ সংস্থা আরআইএ জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও বেলারুশের নেতা আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো পরমাণুযুদ্ধ পরিস্থিতি সংক্রান্ত ওই মহড়া পর্যবেক্ষণ করেছেন। টেলিভিশনের পর্দায় রুশ প্রেসিডেন্টের পরমাণু যুদ্ধের প্রস্তুতি দেখার ছবিও প্রকাশ পেয়েছে। খবর বিবিসির।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি পুতিনের ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের ঘোষণার পর এই প্রথম ‘নিউক্লিয়ার স্ট্র্যাটেজিক ফোর্স’-এর মহড়া অনুষ্ঠিত হলো। এর আগে স্থল এবং ডুবোজাহাজ থেকে পরমাণু অস্ত্রবাহী ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা করেছে রুশ সেনারা। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটো এবং ইউক্রেনের ওপর চাপ বাড়াতে পুতিন কৃষ্ণসাগরের গভীরে পরমাণু বোমা পরীক্ষা করতে পারেন বলে সম্প্রতি কয়েকটি পশ্চিমা সংবাদমাধ্যম দাবি করেছিল। বুধবারের পর সেই আশঙ্কা আরও প্রবল হলো বলে সামরিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন।
পুতিনকে বিদেশে সৈন্য ব্যবহারে সবুজ সংকেত দিয়েছে রাশিয়ার পার্লামেন্ট। তারপরই বেলারুশের নেতা আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোকে পাশে নিয়ে টেলিভিশনের পর্দায় যৌথ পরমাণু মহড়া দেখেন পুতিন। জাহাজ, বিমান ও ডুবোজাহাজ থেকে পরমাণু অস্ত্রের মহড়া চলেছে এবং জল ও স্থল থেকে নির্ভুল দক্ষতায় নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুকে আঘাত হানতে সফল হয়েছে সেগুলো
মহড়া শেষে ক্রেমলিন জানিয়েছে, পরমাণু অস্ত্রের মহড়ায় ‘হাইপারসনিক’ এবং ‘ক্রুজ’ ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। বিশেষ জায়গা থেকে গোটা মহড়ায় চোখ রেখেছিলেন প্রেসিডেন্ট পুতিন ও বেলারুশের নেতা লুকাশেঙ্কো। মহড়া শেষে সেনা কর্মকর্তাদের অভিনন্দনও জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট।
জাপোরিজিয়া, খেরসনসহ বেশ কিছু এলাকায় গত ১০ অক্টোবর থেকে নতুন করে হামলা শুরু করেছে রাশিয়া। সামরিক লক্ষ্যবস্তুর পাশাপাশি নির্বিচারের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায়ও ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলোর দেয়া অস্ত্রের সাহায্যে সেই হামলা প্রতিরোধের চেষ্টা চালাচ্ছে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির অনুগত বাহিনী। এই পরিস্থিতিতে রাশিয়া পরমাণু হামলা চালাতে পারে বলে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যের মতো কয়েকটি দেশ আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ বিষয়ে মস্কোকে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন।
এদিকে ইউক্রেন নিজ ভূখণ্ডে বিশেষ ‘ডার্টি বোম’ ব্যবহার করে রাশিয়ার ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছে মস্কো। এ অভিযোগ অস্বীকার করে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, ইউরোপে যদি কেউ পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করে, তা কেবল রাশিয়ার পক্ষেই সম্ভব।