গ্যাবায় শেষ ওভারে জিম্বাবুয়ের জয়ের জন্য দরকার ১৬ রান। বল হাতে আসেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। যিনি নিজের প্রথম ৩ ওভার বল করে দেন ২৭ রান। সৈকতের শেষ ওভারে ১১ রান নেয় জিম্বাবুয়ে। তখন ৪ রানে জিতে উদযাপন শুরু করেন সাকিবরা। দুই দল মাঠ ছাড়ে। কিন্তু না, শেষ হয়েও হলো না। মূল নাটকীয়তা তখনো বাকি!
জিম্বাবুয়ের জয়ের জন্য যখন ৬ বলে দরকার ১৬ রান। তখন উইকেটে ছিলেন ২৭ রান করা রায়ান বার্ল এবং ২ রান করা ব্র্যাড ইভান্স।
সৈকতের প্রথম বলে লেগ বাই হিসেবে আসে ১ রান। স্ট্রাইক প্রান্তে আসেন ইভান্স। দ্বিতীয় বলে তাঁকে আউট করেন সৈকত। এরপর উইকেটে আসেন রিচার্ড এনগারাভা। তৃতীয় বলে অতিরিক্ত থেকে আরও ৪ রান আসে।
সৈকতের চতুর্থ বলে এনগারাভা ছক্কা মারলে ম্যাচ ঘুরে যায় জিম্বাবুয়ের দিকে। শেষ দুই বলে দরকার হয় ৫ রান। পঞ্চম বলে এনগারাভাকে আউট করেন সৈকত। ম্যাচে তখন টানটান উত্তেজনা। উইকেটে আসেন ব্লেসিং মুজারাবানি।
শেষ বল থেকে দরকার ৫ রান। ৪ রান হলে ম্যাচ হবে ড্র। সৈকত করলেন ওভারের শেষ বল। ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে এসে মারতে গিয়ে মিস করলেন মুজারাবানি। হলেন স্টাম্পিং। ৪ রানে জয়ী বাংলাদেশ। খালি চোখে এটাই মনে হচ্ছিল। খেলোয়াড়রাও উদযাপন শুরু করে দেন।
টেলিভিশন আম্পায়ার যখন স্টাম্পিং দেখছিলেন, মনে হচ্ছিল শুধুই আনুষ্ঠানিকতা। তবে চোখ আটকে গেল নুরুল হাসানের হাতের দিকে। তিনি বল ধরেছেন স্টাম্পের সামনে এসে। আইন অনুযায়ী, সেটি নো বল।
এমসিসিতে ক্রিকেট আইনের ২৭.৩.১ ধারায় বলা আছে, ওই স্টাম্পিংয়ের সময় সোহানকে থাকতে হতো উইকেটের পেছনে। কিন্তু উইকেটকিপার সামনে থেকে স্টাম্প করে বসেন। তাতে ডেলিভারিটি হয়ে যায় নো বল।
ফলে ফের নাটকীয়তা দেখা দেয় গ্যাবায়। করমর্দন করতে থাকা দুই দলের খেলোয়াড়দের আবার মাঠে নামতে হয়। এবার জিম্বাবুয়ের প্রয়োজন ১ বলে ৪ রান। সেই সঙ্গে ফ্রি হিটের সুযোগ। স্বাভাবিকভাবেই চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। কিন্তু চাপ সামলে কোনো অঘটন হতে দিলেন না সৈকত। তার ডেলিভারিটি মুজারাবানি এবারও মিস করে যান। এবার অবশ্য তিনি ছিলেন ক্রিজের ভেতরই। সোহান খানিকটা সময় নিয়ে, উইকেটের বেশ পেছনে থেকেই ভাঙেন স্টাম্প। তাতে ৪ নয় ৩ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে লাল-সবুজের দল। ফের উদযাপন শুরু হয় বাংলাদেশর।
এভাবেই বাংলাদেশের জয়ের দিনে শেষ ওভারের শেষ বলে জমে ওঠে নাটকীয়তা। তবে শেষ পর্যন্ত স্বস্তির জয় পায় বাংলাদেশ।
ম্যাচশেষে প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার নিতে আসা তাসকিন আহমেদ জানিয়েছেন, তিনি জীবনে এমন কিছু দেখেননি। আর জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক শিন উইলিয়ামস এমন ঘটনাকে বলেছেন ‘অদ্ভুত’!
রিচার্ড এনগারাভা আগের বলে স্টাম্পিং হওয়ার পরই সোহানকে সতর্ক করেছিলেন। সোহান সাকিবের সতর্কতা মনে রাখেননি বলেই না ম্যাচে হলো এমন নাটকীয়তা। দুবার জয় উদযাপন করতে হলো বাংলাদেশকে।