একটা বিশ্বকাপ শেষ। আটটি আসর গেল, এখনও প্রস্তুতি নেই ঠিকঠাক। অধিনায়ক জানেন দলের ক্ষমতা। অকপটে বলেন, বড়দের হারালে তা হবে অঘটন! বাংলাদেশ কখনোই অঘটন-ঘটন পটীয়সী হতে পারেনি। ফলে সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে বারবার। যদিও পরিসংখ্যান হাঁটছে উল্টোদিকে। জানান দিচ্ছে, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল আসর ২০২২ এর অস্ট্রেলিয়া পর্ব।
কিন্তু কতটা সফল? নেদারল্যান্ডস ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জয় তো প্রত্যাশিতই ছিল। সেই প্রত্যাশিত জয় পেতেও কম ঘাম ছোটেনি। ওপেনিং তথৈবচ; মিডল অর্ডার, লোয়ার অর্ডার বলে কিছু নেই। সাকিব আল হাসান গলা ফাটিয়ে আহ্বান জানিয়েছেন, সতীর্থদের প্রতি, মোমেন্টাম ধরতে। দল হয়ে খেলতে। বাংলাদেশ পারেনি!
যে দুই ম্যাচে জয় পেয়েছে, একটিতে তাসকিনের ওয়ান ম্যান শো। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শান্ত খেলেছেন সামর্থ্য দিয়ে, শেষাংশে সাকিবের দুর্দান্ত রানআউট ছাপিয়ে গেছে সেটি। ভারতকে আবারও প্রায় হারিয়ে দিচ্ছিল! লিটন দাসের সাহসী ব্যাটিং ম্যাচ হাতের মুঠোয় এনে দেওয়ার পরেও পুরনো ভুলে হাতছাড়া!
এতকিছুর পর পাকিস্তানের সঙ্গে ম্যাচ আরেকটি সুযোগ এনে দেয়। জিতলে সেমিফাইনাল। বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট বলেছে, আমাদের নজর পরের বিশ্বকাপে। তাই বলে এবার সুযোগ পেলেও ভালো করবে না দল! অথচ বাংলাদেশের চেয়েও আসরে ব্যাকফুটে ছিল পাকিস্তান। সেই দল খাদের কিনারা থেকে উঠে লুফে নিল সুযোগ। যাদের বিদায় দেখতে পেয়েছিল সবাই, তারাই এখন সেমিতে!
বাংলাদেশ দলের অন্যতম বড় সমস্যা অজুহাত। হারলেই দলের ব্যর্থতা না খুঁজে অজুহাতের দ্বারস্থ হয়। দুই শব্দের আরেকটি অস্ত্র, আমরা শিখছি! তবে মনে হচ্ছে, সত্যিই শিখতে পারছে টাইগাররা। অনভিজ্ঞ, তরুণ এক দল নিয়ে বিশ্বকাপে গিয়ে তুলেছে ১৫ বছরের আরাধ্য জয়। তাসকিন আহমেদ ফিরে এসেছেন ছন্দে, মুস্তাফিজুর রহমান নামের প্রতি পুরোপুরি সুবিচার করতে না পারলেও অন্তত অবিচার করেনি।
ক্রিকেটের কুলীন সংস্করণ টি-টোয়েন্টিতে এখন আউট অব দ্য বক্স খেলছে এমনকি ছোট দলগুলোও। লড়াইয়ে মানসিকতা আর নিজেদের খোলনলচে বদলে ফেলতে পারলে পুনরায় স্বপ্ন দেখা যেতেই পারে। এতটুকুই বা কম কিসে!