স্পোর্টস ডেস্ক :
মেলবোর্নে ফিরল না ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপের স্মৃতি। ইমরান খান হতে পারলেন না বাবর আজম। এর মধ্যে দিয়ে ৩০ বছর আগের দুঃখ ঘুচল ইংরেজদের। ফাইনালের রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে উড়িয়ে দিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়ে গেল ইংল্যান্ড। ২০১০ সালে তারা প্রথমবার এই ফরম্যাটে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছিল।
ওপার বাংলার প্রভাবশালী দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা ইংল্যান্ডের এই শিরোপা জয়ের খবরের শিরোনাম করেছে “বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড, ৩০ বছর আগের দুঃখ ঘুচল ইংরেজদের, ইমরান হতে পারলেন না বাবর।” মেলবোর্নে এদিন টসে জিতে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ইংল্যান্ডের অধিনায়ক বাটলার। তার সিদ্ধান্ত সঠিক প্রমাণিত করেন দলের বোলাররা। ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে মাত্র ১৩৭ রান করে বাবর আজমরা।
জবাবে ইংল্যান্ডের ব্যাটিংয়ের শুরুটা ভাল হয়নি। ভারতের বিরুদ্ধে ভাল খেললেও ফাইনালে মাত্র ১ রানে আউট হন অ্যালেক্স হেলস। নিজের প্রথম ওভারে দুর্দান্ত ইয়র্কারে তাকে সাজঘরে ফেরান শাহিন আফ্রিদি। কিন্তু অপর প্রান্তে বাটলারকে দেখে মনে হচ্ছিল, ভারতের বিরুদ্ধে যেখানে শেষ করেছিলেন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সেখান থেকেই শুরু করেছেন। নাসিম শাহকে এক ওভারে চারটি চার মারেন তিনি। পাকিস্তানকে খেলায় ফেরান হারিস রউফ। প্রথমে ১০ রানের মাথায় ফিলিপ সল্ট ও তারপরে ২৬ রানের মাথায় বাটলারকে আউট করেন তিনি।
বাটলার আউট হলেও চাপে পড়েনি ইংল্যান্ড। বেন স্টোকস ও হ্যারি ব্রুক জুটি বাঁধেন। যে ভুল পাকিস্তানের ব্যাটাররা করেছিলেন সেই ভুল তারা করেননি। বল দেখে খেলছিলেন। অহেতুক ঝুঁকি নেননি। ধীরে ধীরে লক্ষ্যের কাছে যাচ্ছিলেন তারা। পাকিস্তানের বোলাররা চেষ্টা করছিলেন এই জুটি ভাঙতে। নাসিম এক ওভারে রান কম দেন। চাপ কিছুটা বাড়ায় পরের ওভারে শাদাবকে বড় শট মারতে গিয়ে শাহিনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ব্রুক। তিনি করেন ২০ রান। পরের ওভারে স্টোকসকে রান আউটের সুযোগ হারান শাদাব।
শেষ দিকে রানের গতি একেবারে কমে যায় ইংল্যান্ডের। নাসিম, হারিসদের বলে ব্যাট ছোঁয়াতে পারছিলেন না স্টোকস। দেখে বোঝা যাচ্ছিল চাপে পড়ে যাচ্ছেন তিনি। শেষ পাঁচ ওভারে জিততে দরকার ছিল ৪১ রান। বল করতে আসেন শাহিন। কয়েক ওভার আগেই ক্যাচ ধরতে গিয়ে চোট পেয়েছিলেন তিনি। ফলে বল করতে যাওয়ার সময় খোঁড়াচ্ছিলেন। এক বল করেই উঠে যান শাহিন। বড় ধাক্কা খায় পাকিস্তান। শাহিনের ওভার শেষ করেন ইফতিকার। শেষ দু’বলে একটি চার ও একটি ছক্কা মারেন স্টোকস। ওই দু’বলেই খেলার ভাগ্য নির্ধারণ হয়ে যায়। তার পরে আর আটকানো যায়নি ইংল্যান্ডকে। শেষ পর্যন্ত বল বাকি থাকতে জিতে যায় ইংল্যান্ড। রান করে অপরাজিত থাকেন স্টোকস।
উল্লেখ্য, ১৯৯২ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে পাকিস্তান টস জিতেছিল। শুরুতে ব্যাট করেছিল যদিও। সেই ম্যাচটায় ইংলিশদের হারিয়েই প্রথমবার শিরোপা উঁচিয়ে ধরেছিল পাকিস্তান। ধুঁকতে ধুঁকতে শেষ পর্যন্ত শিরোপা জেতায় তা ক্রিকেট ইতিহাসে মিরাকল অব নাইন্টি টু নামে অমর হয়ে আছে। তবে বাবর আজমরা সেটারই পুনরাবৃত্তি ঘটাতে পারলেন না।