বিজ্ঞপ্তি:
দৈনিক শাহনামার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। জাতীয়, রাজনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন সহ সকল সংবাদের সর্বশেষ আপডেট জানতে ভিজিট করুন www.shahnamabd.com

বিশ্বকাপ বলের ইতিহাস নিয়ে যত কথা

বিশ্বকাপ বলের ইতিহাস নিয়ে যত কথা

স্পোর্টস ডেস্ক :

চার বছর পরপর ফুটবল বিশ্বকাপের মহাযজ্ঞে বুঁদ হয়ে থাকে পুরো বিশ্ব। কয়েকদিন বাদে শুরু হবে সেই মহাযজ্ঞ। যেখানে ছোট্ট একটি বলের পেছনে মাঠে ছুটবে ৩২টি দল। মাঠের বাইরে ফুটবল উন্মাদনায় মেতে থাকবে কোটি কোটি ভক্ত।  এনটিভি অনলাইনের ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজনের আজকের পর্বে থাকছে এই ছোট্ট বলটির ইতিহাস ও নকশা নিয়ে যত কথা।

বিশ্বকাপ বলের ইতিহাস :

১৯৩০ সাল থেকে শুরু হয় ফুটবল বিশ্বকাপ। ফুটবল তখন খেলত গুটি কয়েক দেশ। এক দেশেরই একাধিক দল অংশ নেওয়ার সুযোগ ছিল তখন। তা ছাড়া ফুটবলের বল কিংবা অন্যান্য দিক নিয়ে তেমন আলোড়ন তখন সৃষ্টি হয়নি।

কিন্তু দ্রুতই রূপ বদলাতে থাকে ফুটবলের এই বৈশ্বিক আয়োজন। একটা সময় ‘গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ বলা হতো অলিম্পিককে। সেই তকমাটা নিজের করে নেয় ফুটবল বিশ্বকাপ। পরিবর্তন আসতে শুরু করে আকার, আয়োজন, জনপ্রিয়তা সবক্ষেত্রে। তবে বলের দিকটি ভাবনায় আসে আরও অনেক পরে। সেটা আসে ১৯৭০ সালের পর থেকে।

১৯৭০ সালের আগ পর্যন্ত স্বাগতিক দেশই বল প্রস্তুত করতো। তখন কোনো অফিশিয়াল বল ছিল না। টি-মডেল দিয়ে শুরু হয়েছিল প্রথম বিশ্বকাপ। পরের আসরে ইতালির বল ফেদেরালে ১০২ দিয়ে খেলা হয়েছিল। ১৯৩৮ সালের বিশ্বকাপ হয়েছিল ফ্রান্সে। সেই আসরে  অ্যালেন দিয়ে খেলা হয়েছিল।

১৯৫০ সাল থেকে চামড়ার বল ব্যবহারের প্রচলন শুরু হয়। যার নাম দেওয়া হয় দুপলো টি। এরপর ১৯৭০ সালের বিশ্বকাপে বল নিয়ে চমক দেখায় খেলাধুলার সামগ্রী প্রস্তুতকারী জার্মান প্রতিষ্ঠান অ্যাডিডাস।

বল প্রস্তুতকরণে তাদের আগমন পুরোনো সংস্কৃতি বদলে দেয়। ১৯৭০ সালে মেক্সিকো বিশ্বকাপে টেলস্টার বলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয় অ্যাডিডাস। যাতে প্রথমবার ব্যবহৃত হয় সাদা-কালো রং। পরের আসরে জার্মানিতে ১৯৭৪ সালেও একই ডিজাইনের বল দিয়ে খেলা হয়। যেটার নাম ছিল টেলস্টার ড্যুরলাস্ট। এভাবেই চলে পরের কয়েকটি বিশ্বকাপ।

এরপর ১৯৯৮ সালের ফ্রান্স আসরে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ বলে তিন রংয়ের ব্যবহার করা হয়। যেটির নাম ছিল ট্রাইকালার। ২০০২ সালের বিশ্বকাপে ব্যবহৃত হয় ফিবারনোভা। পরের আসরে জার্মানিতে টিমগাইস্ট দিয়ে খেলা হয়।

২০১০ সালের বিশ্বকাপে বল নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়তে হয় অ্যাডিডাসকে। ওই আসরে তারা বলের আকৃতিতে বেশ পরিবর্তন আনে। বলের প্যানেল ১৪ থেকে ৮-এ নামিয়ে আনে তারা। তখন এই বল আরও মসৃণ হয়ে ওঠে। কিন্তু বেশ সমালোচনা শুনতে হয়। এই সমালোচনার জন্যই বলটি নাম দেওয়া হয় জাবুলানি। ব্রাজিলের গোলরক্ষক হুলিও বলটিকে সুপার মার্কেটে বিক্রি হওয়া সস্তা বলের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। এ ছাড়া ইকার ক্যাসিয়াস বলটিকে বলেছিলেন ‘ভয়ঙ্কর’। অ্যাডিডাসের দাবি ছিল, বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরই তারা জাবুলানিকে মাঠে ছেড়েছে।

২০১০ সালের সমালোচনার পর ২০১৪ সালে ব্রাজিল বিশ্বকাপে ব্রাজুকা পরিচয় করিয়ে দেয় অ্যাডিডাস। ওই বলটিতে ব্রাজিলিয়ান উইশ ব্যান্ডের অনুকরণে এর প্যানেলগুলোকে বহু রঙের ফিতার মতো রাঙানো হয়। এই বলে প্যানেল কমিয়ে আট থেকে ছয়টিতে নামানো হয়। এর জন্য ব্যাখাও দেয় তারা।

সবশেষ রাশিয়া বিশ্বকাপে অ্যাডিডাস আবার চমকে দেয়। তারা ১৯৭০ সালের বিশ্বকাপের কথা স্মরণ করে ফের মাঠে আনে টেলস্টার। বলটির ডিজাইনও করা হয়ে ১৯৭০ সালের বিশ্বকাপের আদলে। তবে সেটি নিয়ে কোনো সমালোচনা হয়নি।

কাতার বিশ্বকাপের বল ‘আল রিহলা’

আসন্ন বিশ্বকাপের জন্য ‘আল রিহলা’ বলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে অ্যাডিডাস। আরবি ভাষায় অর্থ হল যাত্রাপথ বা ভ্রমণ। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম মার্কার প্রতিবেদন অনুসারে, এই নিয়ে টানা ১৪টি আসরে বলের প্রস্তুতকারক হিসেবে নাম থাকছে অ্যাডিডাসের।

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারে বসবে এবারের বিশ্বকাপ। ফিফার ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, কাতারের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তৈরি করা হয় ‘আল রিহলা’কে। বলটির গঠন, আকৃতি ও রঙ নির্ধারণ করা হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটির সঙ্গে তাল মিলিয়ে। সাদা ধবধবে বলটির মধ্যে আছে গোলাপির আভা, সঙ্গে নিয়ন হলুদ ও নীল রঙের ছোঁয়া। লিওনেল মেসি, কিলিয়ান এমবাপ্পে কিংবা নেইমারদের পায়ের ছন্দে এবার বিশ্বকাপ মাতাবে ‘আল রিহলা’। সেই ছন্দেই মগ্ন হয়ে থাকবে ফুটবল প্রেমীরা।

Please Share This Post in Your Social Media




All rights reserved by Daily Shahnama
কারিগরি সহায়তা: Next Tech