স্পোর্টস ডেস্ক :
আগামী রবিবার থেকে কাতারে শুরু হতে যাওয়া বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজনের জন্য আটটি স্টেডিয়াম প্রস্তুত করেছে আয়োজক কর্তৃপক্ষ। পুরোপুরি প্রস্তুতি সম্পন্ন হওয়া স্টেডিয়মাগুলোতে এখন শুধুমাত্র ম্যাচ গড়ানোর অপেক্ষা।
কাতার বিশ্বকাপের আট স্টেডিয়াম-
লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়াম, লুসাইল
এবারের বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় এই স্টেডিয়ামে আগামী ১৮ ডিসেম্বর ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও গ্রুপ পর্বে বেশ কয়েকটি ম্যাচ ছাড়াও প্রথম সেমিফাইনালের ভেন্যু এই লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়াম। দোহার ১৫ কিলোমিটার উত্তরে দুই লাখ জনসংখ্যার পরিকল্পিত একটি শহর লুসাইল। বিশ্বকাপের পর এই স্টেডিয়ামটিকে সামাজিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের বড় একটি স্থান হিসেবে পরিবর্তিত করার পরিকল্পনা রয়েছে। এ কারণে ৮০ হাজার ধারণক্ষমতা সম্পন্ন স্টেডিয়ামটির বেশীরভাগ আসন উঠিয়ে অন্যত্র দান করা হবে।
আল-বায়াত স্টেডিয়াম, আল-খোর
রবিবার (২০ নভেম্বর) কাতার বনাম ইকুয়েডরের মধ্যকার উদ্বোধনী ম্যাচটি আল-খোরের আল-বায়াত স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া গ্রুপ পর্বের স্পেন বনাম জার্মানির মধ্যকার হাই ভোল্টেজ ম্যাচটিসহ গ্রুপ পর্বের পাঁচটি, শেষ ১৬‘র একটি, কোয়ার্টার ফাইনালের একটি ও দ্বিতীয় সেমিফাইনাল এই মাঠেই অনুষ্ঠিত হবে। বেদুইন তাবুর আদলে এই স্টেডিয়ামটি নির্মাণ করা হয়েছে। বিশ্বকাপের পর স্টেডিয়ামটির ছাদ সড়িয়ে ফেলার পরিকল্পনা রয়েছে। দোহার ৩৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় অন্যতম ব্যস্ত শহর হিসেবে আল-খোর পরিচিত। আল-খোর থেকে রাজধানী দোহায় দ্রুত পৌঁছানোর জন্য মেট্রো রেলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সমর্থকদের যাতায়াতের জন্য সবচেয়ে কষ্টকর একটি ভেন্যু হিসেবে এটিকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর ধারণক্ষমতা ৮০ হাজার দর্শক।
এডুকেশন সিটি স্টেডিয়াম, আল-রাইয়ান (৪০ হাজার)
দোহার পশ্চিমাঞ্চলে আল-রাইয়ান শহরের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মধ্যে এই স্টেডিয়ামটি অবস্থিত। এখানে যেতেও মেট্রো ব্যবহার করতে হবে। এই স্টেডিয়ামে গ্রুপ পর্বের ৬টি, শেষ ১৬ ও কোয়ার্টার ফাইনালের একটি করে ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্বকাপের পর এর ধারণক্ষমতা অর্ধেকে নামিয়ে আনা হবে।
আহমাদ বিন আলি স্টেডিয়াম, আল-রাইয়ান (৪০ হাজার)
কাতারের ঘরোয়া ফুটবলের অন্যতম সফল ক্লাব আল-রাইয়ানের হোম ভেন্যু এই আহমাদ বিন আলি স্টেডিয়াম। পুরনো ভেন্যু ঠিক পাশেই নতুন করে বিশ্বকাপকে সামনে রেখে এই স্টেডিয়ামটি নির্মাণ করা হয়েছে। এডুকেশন সিটির কাছেই এই ভেন্যুর জন্য একটি মেট্রো স্টেশন আছে। এখানে আসলে সমর্থকরা মধ্যপ্রাচ্যের মরুভূমির আবহ দেখতে পাবে। এই স্টেডিয়ামটিরও ধারণক্ষমতা বিশ্বকাপের পর অর্ধেকে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা রয়েছে।
খালিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়াম, দোহা (৪০ হাজার)
১৯৭৬ সালে নির্মিত এই স্টেডিয়ামটি কাতার বিশ্বকাপের স্বত্ব পাবার সময় একমাত্র ফুটবল ভেুন্য হিসেবে পরিচিত ছিল। যদিও তারপর এর অনেক কিছুই সংষ্কার করা হয়েছে। ২০১১ এশিয়ান কাপ ফাইনাল ও লিভারপুল ও ফ্ল্যামেঙ্গোর মধ্যকার ২০১৯ ক্লাব ওয়ার্ল্ড কাপের ফাইনাল এই স্টেডিয়ামেই অনুষ্ঠিত হয়েছে। আগামী ২১ নভেম্বর এই মাঠেই ইরানের বিপক্ষে ইংল্যান্ড তাদের বিশ্বকাপ মিশন শুরু করবে। এছাড়া গ্রুপ পর্বের আরো পাঁচটি ও নক আউট পর্বে শেষ ১৬‘র একটি ম্যাচ এখানে অনুষ্ঠিত হবে।
আল-থুমামা স্টেডিয়াম, দোহা (৪০ হাজার)
দোহার দক্ষিণে হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে অবস্থিত এই স্টেডিয়ামটি। মধ্যপ্রাচ্যে পুরুষরা ঐতিহ্যগতভাবে মাথায় যে টুপি পড়ে থাকে তার আদলেই এই স্টেডিয়ামটি নির্মান করা হয়েছে। এখানে ৬টি গ্রুপ পর্বের ম্যাচ ও একটি কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচ আয়োজিত হবে। বিশ্বকাপের পর ব্যয় সংকোচনে এর ধারণক্ষমতা ২০ হাজারে নামিয়ে আনা হবে।
স্টেডিয়াম ৯৭৪, দোহা (৪০ হাজার)
৯৭৪ নম্বরটি কাতারের আন্তর্জাতিক ডায়াল কোড। একইসাথে স্টেডিয়াম নির্মাণে যে কন্টেইনার ব্যবহার করা হয়েছে তার সংখ্যাও এর মাধ্যমে প্রতিনিধিত্ব হয়েছে। বিশ্বকাপের পর এই স্টেডিয়ামটি পুরোপুরি ভেঙ্গে ফেলা হবে।
আল-জানুব স্টেডিয়াম, আল-ওয়ারকাহ (৪০ হাজার)
দোহার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর আল-ওয়ারকাহতে এই স্টেডিয়ামটি অবস্থিত। কাতারের ঐতিহ্যবাহী বিশেষ নৌকার আদলে এই স্টেডিয়ামটি নির্মাণ করা হয়েছে। এই ধরনের নৌকার সাহায্যে সমুদ্রে মাছ ধরা ও মুক্তা আহরণ করা হয়।