বিশ্বকাপের ফাইনাল আরও দুই দিন পর। তবে আর্জেন্টিনা-ফ্রান্স ফাইনালের উত্তাপ ছড়াতে শুরু করেছে এখনই। চার বছর আগে রাশিয়া বিশ্বকাপে শেষ ষোলোর লড়াইয়ে ফ্রান্সের কাছে ৪-৩ গোলে হেরে বিশ্বকাপ স্বপ্ন শেষ হয়েছিল লিওনেল মেসির। চার বছর পরে আবারও দুই দল মুখোমুখি। কী অপেক্ষা করছে এবার! লিওনেল মেসি গতবারের শোধ নেবেন? নাকি আবারও ফ্রান্সই জয়ের মালা গলায় পরবে! ফরাসি কোচ এবার বেশ সতর্ক। দিদিয়ের দেশম এরই মধ্যে বলেছেন, চার বছর আগের মেসি আর এবারের মেসি এক নন। তিনি আরও ভয়ংকর। আরও বেশি পরিণত। আরও বেশি নিখুঁত। দেশমই কেবল নন, লিওনেল মেসিকে নিয়ে পুরো বিশ্বই প্রায় একই সুরে কথা বলছে। বিশ্বকাপ ফাইনালের আগে লিওনেল মেসিই সবচেয়ে বেশি আলোচনায়। তার বাম পায়ের আরও কয়েকটা জাদু বিশ্বকাপের ফাইনালে দেখা গেলে আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ ট্রফি নিয়েই বাড়ি ফিরতে পারে। লিওনেল মেসিকে আটকানোর কত কৌশলই না বের হয়েছে। প্রতিপক্ষ কোচরা মেসিকে জোনাল মার্কিংয়ে আটকানোর চেষ্টা করেছেন। ম্যান মার্কিং করেছেন। তিন জনকে তার পেছনে লাগিয়ে রেখেছেন। কিন্তু মেসিকে আটকাতে পারেনি কেউই। গোলরক্ষকরাও মেসিকে নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করে মাঠে নামে। মেসি কোন পজিশনে থাকলে কোন দিক দিয়ে আক্রমণ আসতে পারে, সম্ভাব্য একটা ছক তারা কষে নেয়। সেভাবে প্রস্তুতিও নেয়। তবে শেষ মুহূর্তে মেসি এমন কোনো কৌশল করেন, সব প্রস্তুতি বিফল হয়ে যায় প্রতিপক্ষের। ডিফেন্ডাররা বিমূঢ় হয়ে পড়েন! গোলরক্ষকরা বুঝে উঠার আগেই বল জালে জড়িয়ে যায়। মেসির এমন রূপ আরও একবার দেখার অপেক্ষায় আছেন বিশ্বকাপের দর্শকরা। আর্জেন্টাইন সমর্থকরা এখন দোহায় ফাইনালের উত্তাপটা উপভোগ করছেন। হাজার হাজার সমর্থক দলবেঁধে ছুটে যাচ্ছেন ফিফার আয়োজিত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে। ছুটে যাচ্ছেন ফ্যান স্টোরে। প্রিয়জনের জন্য বিশ্বকাপের স্মৃতি হিসেবে কিনে নিচ্ছেন নানা জিনিস। ফরাসি সমর্থক তুলনামূলক অনেক কম দোহায়। প্রায় নেই বললেই চলে। মাঝেমধ্যে তাদেরকে চোখে পড়ে। হয়তো কাতারের বড় কোনো রেস্তোরাঁয় খেতে চলেছেন কয়েকজন মিলে। বেশিরভাগই পরিবারসহ এসেছেন ফরাসিরা। তাদের মধ্যে আছে ফুরফুরে অনুভূতি। ফরাসি মেয়ে লরেলি খুব কম কথা বলেন। ইংরেজি খুব ভালো বোঝেনও না। তিনি আধো আধো ইংরেজিতে বললেন, আমাদের দল দুইবার টানা ফাইনালে। এটা অনেক বড় পাওয়া। আশা করি আমরাই জিতব ফাইনালে। ফাইনালে আর্জেন্টাইনরাও জয়ের জন্য মুখিয়ে আছে। ফাইনালের দিন কয়েক আগে থেকেই উত্তাপ ছড়াতে শুরু করেছে আর্জেন্টিনা-ফ্রান্স লড়াই। ফুটবল বিশ্বকাপের প্রায় শত বছরের ইতিহাসে হয়নি, এমন একটা রেকর্ডের সামনে লিওনেল মেসি। আর্জেন্টাইন এই ফুটবল জাদুকর একই সঙ্গে সর্বোচ্চ গোলদাতা হতে পারেন। আবার সর্বোচ্চ এসিস্টকারীও। এরই মধ্যে ৫টি গোল করেছেন তিনি। ৫টি গোল আছে কিলিয়ান এমবাপ্পেরও। ৩টি গোলে এসিস্ট করেছেন মেসি। ৩টি করে গোলে এসিস্ট করেছেন ব্রুনো ফার্নান্দেজ, হ্যারি কেইন এবং আতোয়ান গ্রিজম্যানও।