মর্ত্যলোক থেকে বিদায় নিয়েছেন ‘ফুটবল রাজা’ পেলে। কোলন ক্যানসারের সঙ্গে দীর্ঘদিন লড়াইয়ের পর গত বৃহস্পতিবার রাতে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান ব্রাজিল কিংবদন্তি। ফুটবলের রাজা খ্যাত পেলেকে হারিয়ে শোকার্ত ভক্তরা। এবার শেষশ্রদ্ধায় তাঁকে অন্তিমযাত্রায় শায়িত করার পালা। পেলে সমাহিত হবেন তাঁর জন্মস্থান সাও পাওলোয়।
মৃত্যুর আগে পেলে বলে গিয়েছিলেন, তাঁকে যেন সান্তোসে নিয়ে যাওয়া হয়। আর সেখানে যেন রাখা হয় কিছু সময়। সে অনুযায়ী, আজ শেষবার প্রিয় সান্তোসে নিয়ে যাওয়া হয়েছে পেলেকে। আজ স্থানীয় সময় সকালে নিয়ে যাওয়া হয় পেলেকে। সেখানে নিয়ে প্রথমে সমাহিতের জন্য মরদেহ প্রস্তুত করা হচ্ছে আলবার্ট আইনস্টাইন স্টেডিয়ামে। এর পরে মরদেহ সান্তোসের ক্যালডেইরা আরবান স্টেডিয়ামে (ভিলা বেলমিরো নামেও পরিচিত) রাখা হবে।
স্টেডিয়ামটির গেট খোলা হবে স্থানীয় সময় সকাল ১০টায়। সেখনে শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন সাধারণ মানুষ। ২ ও ৩ নম্বর গেট দিয়ে তাঁরা প্রবেশ করতে পারবেন। ৭ ও ৮ নম্বর গেট দিয়ে বেরোবেন। আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টা পর্যন্ত ফুটবল সম্রাটের দেহ রাখা থাকবে এই মাঠেই। তার পরে শুরু হবে শেষযাত্রা।
ভিলা বেলমিরো স্টেডিয়ামে যে মাঠের সবুজ ঘাসে বল পায়ে তিনি আলপনা এঁকেছেন, অসংখ্য স্মরণীয় গোল করে স্যান্তোসকে সাফল্যের শিখরে নিয়ে গিয়েছিলেন, সেখানেই আজ থাকবেন তিনি।
এরপর মঙ্গলবার সকালে পেলের মরদেহ নিয়ে ‘শেষযাত্রা’ হবে সান্তোসের রাস্তায়। কফিন নিয়ে যাওয়া হবে ক্যানাল ৬ সড়ক দিয়ে, যেখানে পেলের মা থাকেন। ১০০ বছর বয়সী পেলের মা শয্যাশায়ী।
অন্তিমযাত্রা শেষে মেমোরিয়াল নেকরোপোল একিউমেনিকা নামের সমাধিস্থলের ৯ম তলায় পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে পেলেকে সমাহিত করা হবে। সমাধিস্থলটি মূলত ১৪ তলা ভবন। সেখানে আছে ১৪ হাজার ভল্ট, একটি কৃত্রিম জলপ্রপাত ও একটি কার জাদুঘর। সমাহিত করার অনুষ্ঠানে জনসাধারণের প্রবেশাধিকার থাকবে না।
সংবাদমাধ্যম মিরর জানিয়েছে, পেলের শেষ ইচ্ছা ছিল তাঁর প্রিয় শহর সান্তোসের মেমোরিয়াল নেকরোপোল একিউমেনিকা সমাধিস্থলের নবম তলা তার শেষ বিশ্রামের জন্য বেছে নেওয়া।
গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের তথ্য অনুযায়ী, মেমোরিয়াল নেকরোপোল একিউমেনিকা বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু উল্লম্ব সমাধিস্থল। সেখানে ১৪ হাজার ভল্ট ছাড়া ভবনের নিচতলার নিচে আরও আছে পাথরের তৈরি ভল্টের মতো একাধিক স্থান, রয়েছে শেষকৃত্যানুষ্ঠান করার কক্ষ, একটি শবদাহের স্থান ও একটি সমাধিস্তম্ভ। মূলত যেসব ব্যক্তির পরিবার তাঁদের স্বজনের মৃতদেহ আরো ব্যক্তিগত ও বিশেষভাবে সংরক্ষণ করে রাখতে চান, তাঁদের জন্যই এই সমাধিস্তম্ভ তৈরি করা হয়েছে।