স্পোর্টস ডেস্ক:
আফগানিস্তানের বিপক্ষে উড়ন্ত শুরুর পরই ইংল্যান্ডের কাছে বড় ব্যবধানে হারের ধাক্কা। সবমিলিয়ে প্রথম দুই ম্যাচে অম্ল-মধুর অভিজ্ঞতা সঙ্গী করেই চেন্নাইয়ে বাংলাদেশ দল। ঘুরে দাঁড়ানোর মিশনে যেখানে প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড। আগামীকাল শুক্রবার (১২ অক্টোবর) চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে দুপুর আড়াইটায় শুরু দুই দলের লড়াই।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বড় রানের ব্যবধানে হারলেও সতীর্থদের মনোবল ধরে রাখার আহ্বান জানিয়েছেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। কেননা এখনও বিশ্বকাপে যে আরও সাতটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে বাংলাদেশ। তাই বাংলাদেশকে এখনও সেমির দৌড় থেকে দূরে রাখতে নারাজ সাকিব।
ভারতের সবচেয়ে স্পিন বান্ধব উইকেট ধরা হয় এই ভেন্যুটিকে। মিরপুরের সঙ্গে এই মাঠের কিছুটা মিল আছে। প্রতিপক্ষ হিসেবে দারুণ ছন্দে থাকা নিউজিল্যান্ড হলেও কন্ডিশনের চেনা আবহ বাংলাদেশকে দিচ্ছে সাহস।
কিউইদের স্পিন দুর্বলতার কথা বেশ ভালোই জানা বাংলাদেশের। বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজেও স্পিনারদের সামলাতে হিমশিম খেতে হয় নিউজিল্যান্ডকে। তাই সাকিব-মিরাজদের সামনে বেশ কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে তাদের।
তবে নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং অর্ডারে কনওয়ে-উইলিয়ামসনের মতো তারকা ব্যাটাররা নিজেদের দিনে বেশ ভয়ঙ্কর। সেই বিষয়টিও মাথায় রাখতে হচ্ছে টিম ম্যানেজমেন্টকে। কিউইদের জন্য স্বস্তির খবর এই ম্যাচ দিয়ে প্রত্যাবর্তন হচ্ছে উইলিয়ামসনের।
ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচেই বোঝা গেছে, চেন্নাইয়ের পিচ সাড়ে ৩০০ বা ৪০০ রানের উইকেট না। এই উইকেট শুধু ব্যাটারদের স্বর্গ নয়। বোলারদের বিশেষ করে স্লো বোলারদের সাহায্য করে বেশ। সেখানে সাকিব, মিরাজ আর শেখ মেহেদি হতে পারেন অনেক কার্যকর। স্পিন সহায়ক উইকেটে খেলা হওয়ায় বাংলাদেশকে সমীহ করছেন কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন।
ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “এটা আমাদের জন্য আসলেই কিছুটা চ্যালেঞ্জ। কারণ আপনি জানেন, এটা এমন একটা ফরম্যাট যেখানে যে কেউ, যে কাউকেই হারিয়ে দিতে পারে। এটাতে কোনো সন্দেহ নেই যে, দুই দলের বেশ কিছু ভালো স্পিনার আছে। তারা কালকের ম্যাচে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। আমাদের প্লেয়াররা কি করতে পারে সে দিকেই আমাদের নজর থাকবে।”
অতীত পরিসংখ্যানে অবশ্য নিউজিল্যান্ডের ধারে কাছেও নেই বাংলাদেশ। ৪১ বারের দেখায় ৩০ বারই জিতেছে কিউইরা। ১০ ম্যাচে জয় বাংলাদেশের। আর একটি ম্যাচ বাতিল হয়। বিশ্বকাপের আগেও ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের সাথে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ হারে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের দুশ্চিন্তার সবচেয়ে বড় জায়গা ব্যাটাররা। বোলাররা ভালো করলেও ব্যাটাররা প্রতি ম্যাচেই ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছেন। বিশেষ করে ওপেনাররা। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জিততে হলে লিটন-তামিমের বড় জুটি গড়ার বিকল্প নেই। বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছেন টপ অর্ডার ব্যাটার নাজমুল হোসেন শান্ত।
শান্ত বলেন, “আমার মনে হয় ওপেনিং নিয়ে চিন্তাই না করি। মানে এই চিন্তাটাই বাদ দিয়ে দেই। আমার কাছে মনে হয় যে যারাই টপ-অর্ডারে ব্যাটিং করছে, সবাই খুব ভালো মতো প্রিপারেশন নিয়েই আসছে। দুয়েকটা ভালো ইনিংসই তাদের কনফিডেন্স নিয়ে আসবে বলে আমার মনে হয়। কেউই এখানে রিল্যাক্সে নেই বা দলের জন্য চেষ্টা করছে না– এমন নয়। সবাই চেষ্টা করছে, আশা করছি পরবর্তী ম্যাচে টপ-অর্ডার থেকেও ভালো স্কোর আসবে।”
এই ম্যাচে বাংলাদেশ একাদশে পরিবর্তনের সুযোগ কম। গত ম্যাচে স্পিনার শেখ মেহেদী ভালো করায় অলরাউন্ডার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের একাদশে ফেরার সম্ভাবনা কম। বাংলাদেশ দলের জন্য সুখবর চোটের কারণে এই ম্যাচেও নেই কিউই পেসার টিম সাউদি।
চেন্নাইয়ে কিছুটা চেনা কন্ডিশনে খেলা বলেই বাংলাদেশকে নিয়ে স্বপ্ন দেখছেন সমর্থকরা। সেই স্বপ্ন পূরণে কিউই ব্যাটারদের আটকানো জরুরি। সেই কাজটাই করতে হবে বোলারদের। যদি তা না হয় তবে, বিশ্বকাপে বাংলাদেশের স্বপযাত্রাটা আরও কঠিন হয়ে পড়বে, তা তো বলাই বাহুল্য।