বিজ্ঞপ্তি:
দৈনিক শাহনামার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। জাতীয়, রাজনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন সহ সকল সংবাদের সর্বশেষ আপডেট জানতে ভিজিট করুন www.shahnamabd.com

মাগফিরাতের ১০ দিন

মাগফিরাতের ১০ দিন

ডেস্ক রিপোর্ট :
মাহে রমজানের দ্বিতীয় দশক শুরু হলো। হাদিস শরিফে উল্লিখিত হয়েছে- ক্ষমা ও মার্জনা প্রার্থনার জন্য এই ১০ দিন বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। প্রসঙ্গত যে, মাহে রমজানের প্রথম ১০ দিন রহমতের, দ্বিতীয় ১০ দিন মাগফিরাতের এবং শেষ ১০ দিন নাজাতের অর্থাৎ দোজখের আগুন তথা যাবতীয় ঐহিক পারত্রিক দাবদাহ বা যন্ত্রণা হতে মুক্তি প্রার্থনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

বস্তুত রমজান মাসে চারটি কাজ গুরুত্বসহকারে করা আবশ্যক। আল্লাহর একত্ব ও তার বান্দা হওয়ার কথা বারবার আন্তরিকতার সঙ্গে স্বীকার ও ঘোষণা করা অর্থাৎ কলেমা তৈয়েবা ও কলেমা শাহাদাত বেশি বেশি পাঠ করা, তার কাছে ক্ষমা ও মাগফিরাতের প্রার্থনা করা; ইহলৌকিক ও পারলৌকিক জীবনে পরিত্রাণ লাভের জন্য দোয়া করা এবং উভয় জীবনে যাবতীয় দাবদাহ যন্ত্রণা হতে মুক্তি প্রার্থনা।

আল্লাহ রব্বুল আলামীন তাঁর বান্দার নিকট হতে প্রার্থনা বা মোনাজাত শোনা এবং কবুল করা পছন্দ করেন। আল-কোরআনের ৬ষ্ঠ সূরা আল আন আমের ৬৩-৬৪ আয়াতে উল্লিখিত হয়েছে- ‘বলুন, কে তোমাদের ত্রাণ করেন যখন তোমরা স্থলভাগের ও সমুদ্রের বিপদে কাতরভাবে এবং গোপনে তাঁর নিকট অনুনয় কর এভাবে- আমাদের এই বিপদ হতে ত্রাণ করলে আমরা অবশ্যই কৃতজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত হবো। বলুন আল্লাহই তোমাদেরকে বিপদ হতে ও সমস্ত দুঃখ-কষ্ট হতে পরিত্রাণ করেন। এতদসত্ত্বেও তোমরা তাঁর শরিক কর।’

বিপদে পড়লে মানুষ বিপদ হতে মুক্তির প্রার্থনা করে কাতর স্বরে কিন্তু বিপদ হতে মুক্তি লাভের পর প্রায়শ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না বরং বিপদ হতে মুক্ত পাওয়ার জন্য আল্লাহর পরিবর্তে অন্য কারও সাহায্যের কথা কখনো কখনো স্মরণ করে থাকে। এটা চরম অকৃতজ্ঞতা এবং আল্লাহর সঙ্গে অপরকে শরিক করার মতো গর্হিত অপরাধ। বস্তুত যাবতীয় সাহায্য আসে আল্লাহর তরফ হতেই। তিনি তাঁর কোনো বান্দার অসিলায় বা মাধ্যমে তা সম্পাদন করান।

মাগফিরাত কামনা প্রসঙ্গে কোরআনের উপদেশ স্মর্তব্য- ‘তোমরা ধাবমান হও স্বীয় প্রতিপালকের ক্ষমার দিকে এবং সেই জান্নাতের দিকে যার বিস্তৃতি আসমান ও জমিনের ন্যায়, যা প্রস্তুত করা হয়েছে মুত্তাকিদের জন্য, যারা সচ্ছল ও অসচ্ছল অবস্থায় ব্যয় করে এবং যারা ক্রোধ সংবরণকারী এবং মানুষের প্রতি ক্ষমাশীল; আল্লাহ সৎকর্মপরায়ণদেরকে ভালোবাসেন এবং যারা কোনো অশ্লীল কাজ করে ফেললে অথবা নিজেদের প্রতি জুলুম করলে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং নিজেদের পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। আল্লাহ ব্যতীত কে পাপ ক্ষমা করবে? এবং তারা যা করে ফেলে, জেনে শুনে তারই পুনরাবৃত্তি করে না।’ (সূরা আল ইমরান। আয়াত ১৩৩-৩৫); ‘তোমরা বিনীতভাবে এবং গোপনে তোমাদের প্রতিপালককে ডাক, তাঁকে ভয় ও আশার সঙ্গে ডাকবে’ (সূরা আ’রাফ। আয়াত ৫৫-৫৬)’ তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়া না থাকলে তোমাদের কেউ অব্যাহতি পেতে না এবং আল্লাহ তওবা গ্রহণকারী ও প্রজ্ঞাময়। (সূরা নূর। আয়াত ১০)’ বল, ‘হে আমার বান্দাগণ! তোমরা যারা নিজেদের প্রতি অবিচার করেছ, আল্লাহর অনুগ্রহ থেকে নিরাস হইও না, আল্লাহ সমুদয় পাপ ক্ষমা করে দেবেন। তিনি তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সূরা যুমার। আয়াত ৫৩)।

যাবতীয় অনুকম্পা ও নিয়ামতদানকারী আল্লাহ রব্বুল আলামীনের কাছে বিপদে-আপদে অভাব-অনটনে তাঁরই সাহায্য প্রার্থনা করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে দোয়া ও সাহায্য প্রার্থনার দুটি গুরুত্বপূর্ণ আদবের শিক্ষাও এখানে রয়েছে। বলা হয়েছে, অপারগতা ও অক্ষমতা এবং বিনয় ও নম্রতা প্রকাশ করে দোয়া করা তা কবুল হওয়ার জন্য জরুরি শর্ত। দোয়ার ভাষাও অক্ষমতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং বলার ভঙ্গি ও দোয়ার আকার-আকৃতিও বিনয় ও নম্রতাসূচক হওয়া উচিত। দোয়া প্রার্থনা যাতে দোয়া পাঠে পরিণত না হয় সেদিকে লক্ষ রাখা যেতে পারে। কিছু নির্দিষ্ট বাক্য অর্থ না বুঝে মুখস্থ আওড়ানোর মধ্যে এবং ক্ষেত্রবিশেষে অন্যের পাঠ করা সেই দোয়া না বুঝে শুধু ‘আমিন’ উচ্চারণের মধ্যে দোয়ার নিষ্প্রাণতা প্রকাশ পায়। বলার ভঙ্গি এবং বাহ্যিক আকার-আকৃতিতে বিনয় ও নম্রতা ফুটে না উঠলে দোয়া অভিনয় ও দাবিতে পরিণত হতে পারে।

Please Share This Post in Your Social Media




All rights reserved by Daily Shahnama
কারিগরি সহায়তা: Next Tech