নিজস্ব প্রতিবেদক:
আমতলীর গুলিশাখালী ইউনিয়নের গোছখালী গ্রামে বৃহস্পতিবার রাত ১১ টার সময় ছেলে সন্তান না হওয়ার ক্ষোভে জিদনী (৪০) দিন বয়সী নামের এক কন্যা সন্তানকে পানিতে ফেলে হত্যা করেছে পাষন্ড বাবা জাহাঙ্গীর সিকদার। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করেছে এবং বাবা জাহাঙ্গীর সিকদারকে জিঞ্জাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে। অঞ্জাত আসামী করে মায়ের হত্যা মামলা দায়ের।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের গোছখালী গ্রামের জাহাঙ্গীর সিকদার ও সীমা দম্পতির সোহাগী (৯) এবং জান্নাতী (৩) বছরের ২টি কন্যা সন্তান রয়েছে। এর পর গত ৮ ডিসেম্বর ওই দম্পতির জিদনী নামের আরেকটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। বাবা কন্যা সন্তান জন্মের বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি। তিনি একটি ছেলে সন্তানের আশা করেছিলেন। বৃহস্পতিবার রাত ১০টার সময় বাবা জাহাঙ্গীর সিকদার জিদনিকে নিয়ে ঘড়ে সুয়ে ছিল। এসয় তার স্ত্রী সীমা বেগম এবং তার শ্বাশুরী পারুল বেগম ঘড়ের বাহিরে চাল ঝাড়ার কাজ করছিলেন। শিশুটির মা সীমা বেগম এবং নানী পারুল বেগম কাজ শেষে রাত ১১টার সময় ঘড়ে প্রবেশ করে জিদনিকে দেখতে না পেয়ে ডাক চিৎকার দিলে প্রতিবেশীরা এবং বাড়ির অন্যান্য লোকজন ছুটে এসে খোঁজা খুজির এক পর্যায়ে রাত সাড়ে ১১ টার দিকে ঘড়ের পেছনের ডোবা থেকে ঘুমানোর কাঁথা বালিশ এবং বিছানাপত্রসহ জিদনির মরদেহ উদ্ধার করে। খবর পেয়ে আমতলী থানার পুলিশ রাত ৩ টার সময় লাশ উদ্ধার করে এবং ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে পাষন্ড বাবা জাহাঙ্গীর সিকদারকে জিঞ্জাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।
এলাকাবাসীর ধারনা পরপর ২টি কন্যা সন্তান থাকার পরও আকেটি কন্যা সন্তানের জন্ম হওয়ায় রাগে খোভে পাষন্ড বাবা জাহাঙ্গীর সিকদার নিজ কন্যা শিশু (৪০ দিন বয়সী) জিদনীকে পানিতে ফেলে হত্যা করেছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ময়না বেগম জানান, কন্যা সন্তান হওয়ার পর স্ত্রী সীমার সাথে রাগ করে কোন কথা বলত না স্বামী জাহাঙ্গীর সিকদার। এবং সন্তান জিদনিকে নতুন কোন কাপর চোপরও কিনে দেয়নি সে।
পানিতে ফেলে শিশু হত্যার খবর পেয়ে বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বরগুনা সদর) মহরম আলী ও আমতলী, তালতলী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সৈয়দ রবিউল ইসলাম এবং আমতলী থানার ওসি শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল বাশার জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরগুনার মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মা সীমা বেগম বাদী হয়ে অঞ্জাত আসামী করে শুক্রবার দুপুরে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। বাবা জাহাঙ্গীর সিকদারকে জিঞ্জাসাবাদ চলছে। কোন তথ্য পাওয়া গেলে তাকে আসামী করা হবে।