অনলাইন ডেস্ক:
পিরোজপুরের নাজিরপুর ত্রিভূজ প্রেমের কারণে খুন হন বাগেরহাট সদর উপজেলার হালিশহর এলাকার বাসুদেব মণ্ডলের ছেলে বাবলু মণ্ডল (২১)।
এ ঘটনায় রোববার আদালতে গ্রেফতারকৃত গোপাল মণ্ডল (২০) নামের অপর প্রেমিকের দেয়া এক জবানবন্দিতে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার পশ্চিম চর বানিয়ারী গ্রামে ভগ্নীপতি মহানন্দ মধুর বাড়িতে বেড়াতে এসে গত ৬ ফেব্রুয়ারি নিখোঁজ হন ওই যুবক। নিখোঁজের ৩ দিন পর ওই গ্রামের সমীর মণ্ডলের মাছের ঘেরের পাশে হোগলা ক্ষেত থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
ঘাতক গোপাল মণ্ডল বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার চরবানিয়ারী বাওয়ালীপাড়া গ্রামের গোলক মণ্ডলের ছেলে।
এ ঘটনায় গত ৯ ফেব্রুয়ারি নাজিরপুর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় গত ১১ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্তের দায়িত্ব গ্রহণ করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক মো. আহসান কবির জানান, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর শাহবাগ এলাকা থেকে ওই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত গোপাল মণ্ডলকে (২০) গ্রেফতার করা হয়। পরে তাকে পিরোজপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পল্লবেশ কুণ্ডুর আদালতে হাজির করলে সে খুনের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি প্রদান করে।
পিবিআই সূত্র জানান, স্থানীয় একটি মেয়ের সঙ্গে প্রেম করত ঘাতক গোপাল মণ্ডল ও তার বন্ধু নিহত বাবুল মণ্ডল। এ ঘটনাটি জানা-জানি হলে ঘাতক গোপাল তার বন্ধুকে শাসিয়ে দেয়। কিন্তু তাতে বন্ধু ওই প্রেম থেকে সড়ে না দাঁড়ায়নি।
বাগেরহাট সদর উপজেলার হালিশহর এলাকার বাসুদেব মণ্ডলের ছেলে নিহত বাবলু মণ্ডল গত ২৯ জানুয়ারি সরস্বতী পূজা উপলক্ষে নাজিরপুর উপজেলার পশ্চিম চরবানিয়ারী গ্রামে ভগ্নীপতি মহানন্দ মধুর বাড়িতে বেড়াতে যান। গত ৬ ফেব্রুয়ারি রাতে মোবাইল ফোনে নাজিরপুর উপজেলার পশ্চিম চরবানিয়ারী এলাকায় ডেকে নিয়ে বাবলু মণ্ডলকে (২১) পূর্বপরিকল্পিতভাবে লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করে ও পরে কাঁচি (সিজার) দিয়ে বুকে আঘাত করে হত্যা করে।
খুনের পর লাশ গুম করার জন্য বাবলু মণ্ডলের পরিহিত প্যান্টের বেল্ট খুলে গলায় পেঁচিয়ে লাশ টেনে স্থানীয় সমীর মণ্ডলের মাছের ঘেরের পাশে হোগলা ক্ষেতে ফেলে রাখে। এ সময় গলা থেকে বেল্টটি খুলে ওই হোগলা ক্ষেতে ফেলে দেয়।
এ ছাড়া হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত লাঠি স্থানীয় বিকাশ মণ্ডলের মাছের ঘেরে ও কাঁচি (সিজার) একটি ডোবায় এবং নিহত বাবলু মণ্ডলের ব্যবহৃত মোবাইলটি পার্শ্ববর্তী খালে ফেলে দেয় ঘাতক গোপাল মণ্ডল। গ্রেফতারের পর তার দেয়া তথ্য মতে সেগুলো উদ্ধার করে পিবিআই।
এ ঘটনায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি ভগ্নীপতি মহানন্দ নাজিরপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। ওই দিন বিকালে নাজিরপুর উপজেলার পশ্চিম চরবানিয়ারী গ্রামের সমীর মণ্ডলের মাছের ঘেরের পাশ থেকে বাবলু মণ্ডলের লাশ উদ্ধার করা হয়।