ঢাকা শহর ও ঢাকা বিভাগের বাইরে ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে চট্টগ্রাম বিভাগে। গতকাল রোববার পর্যন্ত এই বিভাগে মোট আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৬৬১। এর পরেই আছে খুলনা বিভাগ। এই বিভাগে এ পর্যন্ত ১ হাজার ৯৭৩ জন আক্রান্ত হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম এই তথ্য দিয়েছে।
তবে ঢাকা শহরে যেমন ডেঙ্গু রোগী বেশি, ঢাকা বিভাগের অন্যান্য জেলাতেও রোগী বেশি। ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হওয়ার তথ্য পাওয়া যাচ্ছে কিশোরগঞ্জ থেকে। পর্যন্ত এই জেলায় ৫০৫ জন আক্রান্ত হয়েছে। এরপর বেশি আক্রান্ত হওয়ার খবর আসছে মানিকগঞ্জ, গাজীপুর ও টাঙ্গাইল থেকে। ঢাকা শহর বাদে ঢাকা জেলা ও ঢাকা বিভাগের অন্যান্য জেলায় এ পর্যন্ত ৩ হাজার ৪৯০ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে।
ডেঙ্গুতে বেশি আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় স্থানে বরিশাল বিভাগ। এ বিভাগে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা গতকাল পর্যন্ত ছিল ১ হাজার ৫৫৫ জন। চতুর্থ স্থানে আছে রাজশাহী বিভাগ। এই বিভাগে আক্রান্ত ছিল ১ হাজার ৫০২ জন। ময়মনসিংহ ও রংপুর বিভাগে আক্রান্ত ছিল যথাক্রমে ১ হাজার ৫২ ও ৮৪০ জন।
আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা সবচেয়ে কম সিলেট বিভাগে। এ পর্যন্ত এ বিভাগে ৪৭৬ জন আক্রান্ত হয়েছে। এই বিভাগের সুনামগঞ্জ জেলায় ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে স্থির পানি জমতে পারছে না বলে মশার উপদ্রব কম। সে কারণে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যাও কম বলে মনে করে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)।
জেলাভিত্তিক এই পরিসংখ্যানের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করে হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়শা আক্তার বলেন, গত ১৮ বছরে চট্টগ্রামে মাঝেমধ্যে এবং খুলনায় দু–একবার ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। এ বছর সারা দেশেই এটা ধরা পড়ল। ঢাকার বাইরে কোন এলাকায় কেন বেশি, কোন এলাকায় কেন কম, তার নানা কারণ থাকতে পারে। এসব কারণ উদ্ঘাটন ও বিশ্লেষণ করে ভবিষ্যতে এই ধরনের রোগের বিস্তার প্রতিরোধে করণীয় ঠিক করা যাবে।
তবে ঢাকার বাইরে একক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বরিশালের শের–ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বেশি রোগী ভর্তি হচ্ছে। গতকাল রোববার এই হাসপাতালে ৩১৪ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি ছিল। এ পর্যন্ত এই হাসপাতালে ৭৮২ জন ভর্তি হয়েছে।
ঢাকা শহরের নির্দিষ্ট কিছু হাসপাতাল ও ৬৪ জেলার সিভিল সার্জনদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এ পর্যন্ত দেশে ৪১ হাজার ১৭৮ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। গত কয়েক দিনে ঢাকার চেয়ে ঢাকার বাইরে বেশি রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে।