ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার উত্তমাবাদ এলাকায় বৃহস্পতিবার সকালে সুগন্ধা নদীর আকস্মিক ভাঙনে এক ঘণ্টায় এক কিলোমিটার বিলীন হয়ে গেছে। মুহূর্তেই নদীতে তলিয়ে গেছে তিনটি বসতঘর ও একটি ইটভাটার দুই লাখ ইট। এতে ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সকাল ৯টার দিকে সুগন্ধা নদী দিয়ে একটি কার্গো যাওয়ার সময় ঢেউয়ে উত্তমাবাদ এলাকার রিয়াজ ব্রিকসের একাংশে ফাটল দেখা দেয়। পরে এক ঘণ্টার মধ্যেই পুরো এক কিলোমিটার এলাকা ভেঙে নদীতে বিলীন হয়ে যায়। এতে ওই ইটভাটার দুই লাখ ইট পানিতে তলিয়ে যায়, ভেঙে যায় একটি মেশিনঘর। এ ছাড়া পাশের তিনটি বসতঘর মালামালসহ নদীতে বিলীন হয়ে যায়। সম্প্রতি বন্যার পানি কমে যাওয়ার পর থেকে সুগন্ধা নদীর বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দেয়। গত এক সপ্তাহে নলছিটি শহরের মল্লিকপুর, পুরান বাজার সংলগ্ন এলাকা, খোজাখালী, তিমিরকাঠি, দপদপিয়া, ষাইটপাকিয়া এলাকার বিভিন্ন স্থাপনা ও ফসলিজমি ভেঙে নদীতে তলিয়ে গেছে।
রিয়াজ ব্রিকসের ম্যানেজার মো. মাঈন উদ্দিন বলেন, সকালে শ্রমিকরা ভাটায় কাজ করছিল। নদী দিয়ে একটি কার্গো যাওয়ায় ডেউ আসে। এতে বিকট শব্দে ফাটল দেখা দেয় ভাটার বড় একটি অংশে। এক ঘণ্টার মধ্যে দুই লাখ ইট ও একটি মেশিনঘর ভেঙে নদীতে তলিয়ে যায়। আশপাশের আরো তিনটি বসতঘর নদীগর্ভে চলে যায়। ভাটার শ্রমিকরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে প্রাণে রক্ষা পায়। দুই লাখ ইট ও একটি মেশিনঘর নদীতে চলে যাওয়ায় ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
উত্তমাবাদ গ্রামের বাসিন্দা সোহেল তালুকদার বলেন, সকাল ৯টার দিকে আকস্মিক নদীভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা। আগের দিন এখানে স্থানীয় শিশুরা খেলাধুলা করেছিল। আজ তা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। প্রতিবছরই এখানে এক দফায় নদী ভাঙে। কিন্তু কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি পানি উন্নয়ন বোর্ড।
ভৈরবপাশা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নসির উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, আমাদের ইউনিয়নের মধ্যে উত্তমাবাদ এলাকাটি ঝুঁকিপূর্ণ। নদীতে প্রতিবছরই ফসলের জমি, বসতঘর ও বিভিন্ন স্থাপনা ভেঙে যায়। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হলেও তারা আজ পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
এ ব্যাপারে ঝালকাঠি পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাস বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে বিষয়টি শুনেছি। সেখানে আমাদের অফিসের লোকজন গিয়ে দেখে এসেছে। নদীভাঙন রোধে আমরা বেশ কয়েকটি প্রকল্প করেছি। গুরুত্ব অনুযায়ী ভাঙন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।