ভোলার বোরহানউদ্দিনে এবার আখের বাম্পার ফলন হয়েছে। মাটি ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকা, ভালো জাত নির্বাচন, রোগব্যাধি কম থাকা, সময় মতো কৃষি উপকরণ এবং পরামর্শ পাওয়ায় বিগত বছরগুলোর তুলনায় এ বছর ফলন বেশি হয়েছে এমন দাবি কৃষি অফিস ও কৃষকদের। তবে করোনা পরিস্থিতিতে বাজার নিন্মগামী হওয়ার শঙ্কায় কৃষক আখক্ষেত পাইকারি হিসেবে আগাম বিক্রি করা দাম খানিকটা কম পেয়েছেন। কৃষকদের দাবি, ভোলা-বরিশাল ব্রিজ হলে বাজার প্রতিযোগিতামূলক হবে, ক্রেতা বাড়বে। পাওয়া যাবে ফসলের নায্য মূল্য।
বোরহানউদ্দিন উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আখের উৎপাদন বেশি হয়েছে। চলতি বছর এ উপজেলায় ১৩০ হেক্টর জমিতে পাঁচ হাজার ৪৬০ মেট্রিক টন বিভিন্ন জাতের আখ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। অমৃত, রং বিলাশ, ঈশ্বরদি-২০৬ জাতের আখের গড়ে হেক্টর প্রতি উৎপাদন হয়েছে ৪০-৪৫ টন।
কৃষি অফিস আরও জানায়, অন্য যে কোনো ফসলের চেয়ে আখ উৎপাদনে ঝুঁকি নাই। এছাড়াও এর সঙ্গে সাথি ফসল উৎপাদন করে বাড়তি টাকা আয় করা যায়। যার কারণে আখের উৎপাদন খরচ কম হয়। এতে করে কৃষক অন্য ফসলের চেয়ে আখ চাষে বেশি লাভবান হন। এ কারণে কৃষক আখ চাষের দিকে ঝুঁকছেন।
আখ চাষী ইছহাক মিয়া জানান, চলতি বছর ৪৪ শতাংশ জমিতে রং বিলাশ ও ২০৮ প্রজাতির আখ চাষ করেন। এতে শতাংশ প্রতি খরচ হয় ১২৫০ টাকা। ওই জমির আখ তিনি ক্ষেতেই শতাংশ প্রতি তিন হাজার টাকায় বিক্রি করেন। ধানের চেয়ে আখে খরচ ও পরিশ্রম কম কিন্তু আয় বেশি। আখ কোােন চাষীকে ঠকায় না বলে দাবি এই কৃষকের।
আখ চাষী রেশদ আলী, আ. মালেক, খোরশেদ আলম, সহিদুল ইসলাম জানান, আখের রোগ বালাই কম। অন্য ফসলের মতো এতো যত্ন করতে হয় না।আখ বিক্রি করে অর্ধেক লাভবান হওয়া যায়।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ ফাহিম ও মনির হোসেন, জানান, ‘আখের সঙ্গে আলু চাষ সুখে থাকি বার মাস’ শ্লোগানে উজ্জ্বীবিত হয়ে কৃষক আখ চাষে ঝুঁকছেন। তাছাড়া কৃষক আখ চাষের সঙ্গে সাথি ফসল যেমন- আলু, গাজর, বাধাকপি, ফুলকপি, ও শিম চাষ করে লাভবান হতে পারেন। এ জন্য কৃষকরা আখ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. ওমর ফারুখ জানান, আখ চাষ খুব লাভজনক । লাল পচা রোগ ছাড়া তেমন জটিল রোগ নেই এ ফসলে। বর্তমানে আমরা এ উপজেলায় চিবিয়ে খাওয়ার উপেযোগী জাতের আখ চাষের জন্য চাষীদের উদ্বুদ্ধ করছি।
সূত্র : ইত্তেফাক