বিজ্ঞপ্তি:
দৈনিক শাহনামার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। জাতীয়, রাজনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন সহ সকল সংবাদের সর্বশেষ আপডেট জানতে ভিজিট করুন www.shahnamabd.com

শারদীয় দূর্গোৎসব শুরু

শারদীয় দূর্গোৎসব শুরু

দুর্গতিনাশিনী দশভুজা দেবীর বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে বাঙ্গালী সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা।

আগামী বৃহস্পতিবার মহাষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়েই দূর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। ঢাকের বোল, কাঁসর ঘণ্টা ও শাঁখের ধ্বনিতে মুখর হয়ে উঠবে পূজামণ্ডপ। তবে করোনাভাইরাস মহামারির কারণে পূজায় অনেকটা সীমাবদ্ধ থাকছে মণ্ডপগুলো। পরিস্থিতি বিবেচনায় সন্ধ্যা আরতির পর মণ্ডপে দর্শনাথী প্রবেশ বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পূজা উদযাপন পরিষদ।

শাস্ত্র মতে, মহালয়া, বোধন ও সন্ধিপূজা- এই তিন পর্ব মিলেই দুর্গোৎসব। গত ১৭ সেপ্টেম্বর মহালয়ার মধ্য দিয়ে দূর্গা পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। এরপর বোধন দুর্গাপূজার প্রধান একটি আচার। ‘বোধন’ শব্দের অর্থ জাগরণ বা চৈতন্যপ্রাপ্তি। পূজা শুরুর আগে সন্ধ্যায় বেল গাছের শাখায় দেবীর বোধন দুর্গাপূজার একটি অত্যাবশ্যকীয় অঙ্গ। শরৎকালের দুর্গাপূজায় এই বোধন করার বিধান রয়েছে। সাধারণত শুক্লা ষষ্ঠীর সন্ধ্যায় বোধন হলেও এবার তিথি অনুযায়ী পঞ্চমীতেই বোধন পড়েছে। তাই বুধবার সন্ধ্যায় সকল মণ্ডপে দেবীর বোধন হয়েছে। এ বছর মা দোলায় চড়ে আগমন ও গজে চড়ে গমন (প্রস্থান) করবেন। আগামী ২৬ অক্টোবর মহাদশমীতে প্রতিমা বিসর্জনে শেষ হবে দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, করোনা পরিস্থিতির কারণে এ বছর পূজামণ্ডপের সংখ্যা কিছু কমেছে। সারাদেশে ৩০ হাজার ২২৫টি মণ্ডপে দুর্গোৎসব পালনের প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। ঢাকা মহানগরে এ বছর পূজা মণ্ডপের সংখ্যা ২৩৩টি। আর ঢাকা জেলায় পূজা হচ্ছে ৭৪০টি। এছাড়া ঢাকা বিভাগে ৭ হাজার ১৪টি, চট্রগ্রাম বিভাগে ৩ হাজার ৯০৬টি, খুলনা বিভাগে ৪ হাজার ৬৮৯টি, সিলেট বিভাগে ২ হাজার ৬৪৬টি, ময়মনসিংহ বিভাগে এক হাজার ৫৮৪টি, বরিশাল বিভাগে এক হাজার ৭০১টি, রংপুর বিভাগে ৫ হাজার ২৫০টি এবং রাজশাহী বিভাগে ৩ হাজার ৪৩৫টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা হচ্ছে। গত বছর ৩ হাজার একশো মণ্ডপে পূজা হয়েছিলো।

এদিকে করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় সন্ধ্যা আরতির পর পূজা মণ্ডপে দর্শনার্থী প্রবেশ করতে দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি। বুধবার ঢাকেশ্বরী মন্দিরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কিশোর রঞ্জন মণ্ডল জানান, এরআগে রাত ৯টা পর্যন্ত পূজা মণ্ডপ খোলা রাখার সিদ্ধান্ত হলেও সার্বিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সন্ধ্যা আরতির পর মণ্ডপ বন্ধ রাখা হবে। সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী পূজার দিন সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে মায়ের পুষ্পাঞ্জলি সরাসরি সম্প্রচার করবে কয়েকটি টেলিভিশন। একই সময়ে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি ও শ্রী শ্রী ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির নামের ফেসবুক পেজ থেকে মায়ের পুষ্পাঞ্জলি সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। বাড়িতে বসেই এবার ভক্তরা অঞ্জলি দেবেন মায়ের চরণে।

সভায় জানানো হয়, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক করোনা মুক্তির জন্য মহাসপ্তমীর দিনে ১২টা ১ মিনিটে মায়ের কাছে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হবে। মায়ের ভাগের প্রসাদ ছাড়া স্বাস্থ্য ও পরিবার মন্ত্রণালয়ের দেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী খিচুড়ি বা এ জাতীয় প্রসাদ বিতরণ এবং বিজয়ার শোভাযাত্রা এ বছর হবে না। মণ্ডপ থেকে সরাসরি বিসর্জন ঘাটে গিয়ে মাকে বিসর্জন দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক নজরদারির জন্য মনিটরিং সেল করা হয়েছে।

চলমান করোনা পরিস্থিতির মধ্যে সুন্দর ও শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা উদযাপনের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পূজা মণ্ডপগুলো অতিরিক্ত পুলিশ, আনসার, র‌্যাবসহ সাদা পোশাকের পুলিশ নিয়োজিত থাকবে। এছাড়া মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী কাজ করবে। এবার পূজার অনুষ্ঠানমালা শুধু ধর্মীয় রীতি-নীতি অনুসরণ করে পূজা-অর্চনার মাধ্যমে মন্দির বা মণ্ডপ প্রাঙ্গণেই সীমাবদ্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পূজা মণ্ডপে সমবেত সকলের জন্য করোনা স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের জন্য একটি গাইডলাইন প্রণয়ন করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়। মণ্ডপ ও ভক্ত পুজারিদের নিরাপত্তায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তারই আলোকে ২৬দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ওই সকল নির্দেশনায় পূজাকে কেন্দ্র করে শোভাযাত্রা, প্রসাদ বিতরণ ও আলোক সজ্জা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media




All rights reserved by Daily Shahnama
কারিগরি সহায়তা: Next Tech