বিজ্ঞপ্তি:
দৈনিক শাহনামার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। জাতীয়, রাজনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন সহ সকল সংবাদের সর্বশেষ আপডেট জানতে ভিজিট করুন www.shahnamabd.com

বরিশাল মুক্ত দিবস আজ

বরিশাল মুক্ত দিবস আজ

আজকের এই দিনে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর থেকে মুক্ত হয়েছিলো বরিশাল। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্থানি হানাদার বাহিনী বরিশাল থেকে পালিয়ে যাওয়ায় মুক্ত হয় শহর। নগরীর নিয়ন্ত্রণ ভার গ্রহণ করেন মুক্তি সেনারা। সর্বত্র ওড়ানো হয় স্বাধীন বাংলার পতাকা।

১৯৭১ সালে ২৫ মার্চ মধ্যরাতে ঢাকায় অপারেশন সার্চলাইট শুরু করার পর বরিশালে মুক্তিযোদ্ধারা তৎকালীন পুলিশ সুপার ফখরুল ইসলামের কাছ থেকে চাবি নিয়ে বরিশালের মুক্তিযোদ্ধারা পুলিশের অস্ত্রাগার থেকে শত শত রাইফেল গোলবারুদ নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুলইসলাম মঞ্জুরের পেশকার বাড়ি নিয়ে যান। ২৬ মার্চ ভোরে ৯ নম্বর সেক্টর কমান্ডার এম এ জলিলকে সাথে নিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা বরিশালের সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে দক্ষিণাঞ্চলের প্রথম স্বাধীন বাংলা সচিবালয় গঠন করেন। ২৬মার্চ থেকে ২৫ এপ্রিল দীর্ঘ একমাস মুক্তিযোদ্ধারা এই স্থান থেকেই অনেক অভিযান পরিচালনা করেন।

২৫ এপ্রিল পাকিস্থানি বাহিনী সড়ক -আকাশ ও নৌপথ থেকে একযোগে বরিশাল আক্রমণ করে। বরিশালে ঢোকার মুখে চরবাড়িয়া ও গৌরনদীর কটকস্থলে তারা বাধাপান। চরবাড়িয়ায় গণহত্যা চালিয়ে অর্ধশতাধিক মানুষকে মেরে ফেলার পর পাকিস্থানি বাহিনী কীর্তন খোলানদীরপাড়ে বরিশালের পানিউন্নয়ন বোর্ড অফিসে দক্ষিণাঞ্চলীয় হেড কোয়ার্টারগড়ে তোলে। সেখানে বাংকারখুড়ে, ভারি অস্ত্রের সমাবেশ ঘটানতারা। প্রতিদিন বরিশাল, ঝালকাঠী, গৌরনদীসহ দূরদূরান্ত থেকে নিরীহ মানুষদের ধরে এনে তারা গুলি করে হত্যা করে লাশ খালে ফেলে দিতো। শত শত মানুষকে ধরে এনে নৃশংস নির্যাতন করতো। এই ওয়াপদা সংলগ্নখাল ও ব্রিজে মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাসে দুই থেকে তিন হাজার মানুষকে মেরে ফেলা হয়।

ডিসেম্বরে মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণ তীব্র হলে পাক-হানাদার বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসররা চিন্তিত হয়ে পড়ে। ৭ ডিসেম্বর রাত থেকে শহরে জারি করা হয় অনির্দিষ্ট কালের সান্ধ্য আইন। ৮ ডিসেম্বর সকালে জেলা প্রশাসকের দফতরে এক বৈঠকেমিলিত হয় তারা। শহরে কারফিউ চলাকালে সকাল ১০টায় বৈঠক শেষ করে ইপাকিস্থানি বাহিনী বরিশাল ছেড়ে নৌ-পথে পালানোর উদ্যোগ নেয়। খবর পেয়ে ভারতীয় বিমানবাহিনী পলায়নরত পাকিস্থানি বাহিনীর গানবোট, স্টিমার ও লঞ্চলক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে। এতে পাকিস্থানি বাহিনীর স্থানীয় প্রধানসহ যোগীশাজাহান চৌধুরীসহতাদের বহু দোসর নিহত হয়।

অন্যদিকে, সকাল ১০টার দিকে সদর উপজেলার রায়পাশা-কড়াপুর এলাকা থেকে বেজ কমান্ডার রেজায়ে সাত্তার ফারুকের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল শহরের দিকে প্রবেশ করতে থাকে। সাগরদী-দপদপিয়া এলাকা থেকে মুক্তিযোদ্ধা আ. মান্নানের নেতৃত্বে অপর একটি দল শহরে প্রবেশ করে। বেজ-কমান্ডার সুলতান মাস্টারের নেতৃত্বেও একটি দল শহরে ঢুকে পড়ে। বিকাল ৩টায় মুক্তিযোদ্ধাদের সুইসাইডাল স্কোয়াডশহরে ঢোকে। মুক্তিযোদ্ধারা বরিশাল কোতোয়ালি থানা, কালেক্টরেট ভবন ও জেলখানা দখলে নেয়। এরপর কালেক্টরেটের একদল কর্মকর্তা-কর্মচারী একটিজি পেকরে শহরে বিজয়ের বার্তা প্রচার করতে থাকে। ওড়ানো হয় স্বাধীন বাংলার পতাকা।

Please Share This Post in Your Social Media




All rights reserved by Daily Shahnama
কারিগরি সহায়তা: Next Tech