বিজ্ঞপ্তি:
দৈনিক শাহনামার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। জাতীয়, রাজনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন সহ সকল সংবাদের সর্বশেষ আপডেট জানতে ভিজিট করুন www.shahnamabd.com

করোনাকালে ২০২০ সালে যাদের হারিয়েছি

করোনাকালে ২০২০ সালে যাদের হারিয়েছি

অদৃশ্য দানব করোনাভাইরাসের মধ্যেই ২০২০ সালের প্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে পৃথিবী। ভালো মন্দ মিলিয়েই পার হচ্ছে বছরটি। তবে করোনার করাল গ্রাসে পুরোদমে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বাংলাদেশসহ গোটা পৃথিবী। বিশ্বের অর্থনীতি চলছে খুড়িয়ে খুড়িয়ে। নানা সঙ্কটের মধ্যে যুক্ত হচ্ছে স্বজন হারানোর বেদনা। এর উপর করোনা কেড়ে নিচ্ছে রাষ্ট্রের উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিদের, যা সামগ্রীক বেদনার মাত্রা আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে। মৃত্যুর মিছিলে একের পর এক যুক্ত হচ্ছেন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা। সাধারণ মানুষের মতো মহামারি করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন দেশের উল্লেখযোগ্য নামি-দামি ও খ্যাতি সম্পন্ন ব্যক্তিরা। অনেকেই সুস্থ হয়ে উঠলেও না ফেরার দেশে চলে গেছেন মন্ত্রিসভার সদস্য, এমপি, রাজনীতিক, উচ্চ পদস্থ সরকারি কর্মকর্তা, শীর্ষ পর্যায়ের ব্যবসায়ী, চিকিৎসক, পুলিশ, সাংবাদিক ও অভিনেতাসহ উল্লেখ করার মতো অনেকেই।
শিক্ষাঙ্গন:

অধ্যাপক আনিসুজ্জামান:
করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ১৪ মে জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান মারা যান। তিনি ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত ২৭ এপ্রিল গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় অধ্যাপক আনিসুজ্জামানকে মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে তার অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ৫ দিনের মাথায় ২ মে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। করোনায় আক্রান্ত ও হার্টের সমস্যার পাশাপাশি ৮৩ বছরের এই অধ্যাপক কিডনি, ফুসফুস এবং শ্বাসযন্ত্রের জটিলতায় ভুগছিলেন।

অধ্যাপক এমাজ উদ্দিন:
গত ১৭ জুলাই দেশবরেণ্য রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, শিক্ষাবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ মারা যান। তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন কিনা সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি।

প্রখ্যাত প্রকৌশলী অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী:
গত ২৮ এপ্রিল মারা যান জাতীয় অধ্যাপক ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা জামিলুর রেজা চৌধুরী। তিনি সবশেষ ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের (ইউএপি) উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। জামিলুর রেজা চৌধুরী বাংলাদেশের প্রকৌশল জগতে সবার পরিচিত নাম। একাধারে তিনি গবেষক, শিক্ষাবিদ, প্রকৌশলী ও বিজ্ঞানী ছিলেন। ১৯৪৩ সালে সিলেটে তার জন্ম।
সানবিমস স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ নিলুফার মঞ্জুর:

করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৬ মে মঙ্গলবার মারা যান সানবিমস স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ নিলুফার মঞ্জুর। নিলুফার মঞ্জুর সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও অ্যাপেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর স্ত্রী।

ব্র্যাকের স্যার ফজলে হাসান আবেদ:
২০ ডিসেম্বর রাতে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদ মারা যান। তবে তিনি করোনায় আক্রন্ত হয়ে মারা যাননি বলে জানা গেছে। দারিদ্র বিমোচন ও উন্নয়নে ভূমিকা রাখায় স্যার ফজলে হাসান আবেদ তার কর্মের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৮০ সালে র্যানমন ম্যাগসাইসাই পুরস্কার, ২০১১ সালে ওয়াইজ প্রাইজ অব এডুকেশন, ২০১৪ সালে লিও টলস্টয় ইন্টারন্যাশনাল গোল্ডমেডেল, স্প্যানিশ অর্ডার অফ সিভিল ম্যারিট, ২০১৫ সালে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি পুরস্কার অর্জন করেন। ২০০৯ সালে ব্রিটেন তাকে নাইট উপাধি দেয়। সর্বশেষ, চলতি বছর তিনি সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে দক্ষিণ এশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে সাউথ এশিয়ান ডায়াসপোরা অ্যাওয়ার্ড, শিক্ষায় ভূমিকা রাখায় ইয়াডান পুরস্কারের জন্য মনোনীত হন।
শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা ইমামুল কবির শান্ত:

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ৩০ মে শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান মো. ইমামুল কবির শান্ত। একাধারে তিনি শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি, সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিস, শান্তনিবাস, শান্ত-মারিয়াম ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন।
রাজনৈতিক অঙ্গন:

সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম:
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর ব্রেইন স্ট্রোকে গত ১৩ জুন মারা যান সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিম। বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন।

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন:
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ১০ জুন দেশের প্রথম নারী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই করে নেওয়া সাহারা খাতুন মারা যান। থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাতে তার মৃত্যু হয়। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সাহারা ঢাকা-১৮ আসনে সংসদ সদস্য ছিলেন। ২০০৯ সালের আওয়ামী লীগ সরকারে ৩ বছরের বেশি সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ:
গত ১৩ জুন দিনগত রাতে মারা যান ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আবদুল্লাহ। রাজধানীর সম্মিলিতি সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) মারা যান তিনি।

সিলেটের সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান:
করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ১৫ জুন ভোররাতে সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য বদর উদ্দিন আহমদ কামরান মারা যান। ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।

সাবেক এমপি মকবুল হোসেন:
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ মে রাতে মারা যান আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য হাজী মকবুল হোসেন।

সাবেক এমপি কামরুন্নাহার পুতুল:
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২১ মে রাতে মারা যান বগুড়ার সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক নারী বিষয়ক সম্পাদক কামরুন্নাহার পুতুল। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর কামরুন্নাহার পুতুল তৎকালীন বগুড়া-জয়পুরহাট জেলার সংরক্ষিত নারী আসনে এমপি মনোনীত হয়েছিলেন।

বিএনপির সাবেক মন্ত্রী শাহজাহান সিরাজ:
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ১৪ জুলাই মারা যান সাবেক বন ও পরিবেশমন্ত্রী ও বিএনপি নেতা শাহজাহান সিরাজ। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে মারা যান তিনি।
বিএনপির চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ:
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ৯ ডিসেম্বর মারা যান বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে মারা যান তিনি।

বিএনপির সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আনোয়ারুল কবির:
প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ১০ মে মারা যান বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সাবেক বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব.) আনোয়ারুল কবির তালুকদার। তিনি রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) মারা যান।
সাংস্কৃতিক অঙ্গন:

কামাল লোহানী:
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২০ জুন মারা যান সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সাংবাদিক কামাল লোহানী। শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। মুক্তিযুদ্ধের সময় কামাল লোহানী স্বাধীন বাংলা বেতারের সংবাদ বিভাগের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। ১৯৯১ সালে তিনি শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৬ মাসের মাথায় সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে মতবিরোধ হওয়ায় তিনি পিআইবিতে ফিরে আসেন। ২০০৮ সালে ২ বছরের জন্য আবার শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন।

অভিনেতা আলী জাকের:
ক্যানসারের সঙ্গে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৭ নভেম্বর মারা যান বরেণ্য অভিনেতা ও নির্দেশক আলী যাকের। ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এছাড়াও মারা গেছেন- অভিনেতা সাদেক বাচ্চু, এনটিভির অনুষ্ঠান বিভাগের প্রধান মোস্তফা কামাল সৈয়দ, জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী এন্ড্রু কিশোর, উপমহাদেশের কিংবদন্তি সুরস্রষ্টা ও সংগীত পরিচালক আলাউদ্দিন আলী।
চিকিৎসক:

চিকিৎসক মঈন উদ্দিন:
দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম যে চিকিৎসক মারা যান, তিনি হলেন- সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মঈন উদ্দিন। গত ৯ মে ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
চিকিৎসক আবুল মোকারিম মো. মহসিন উদ্দিন:

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ১২ মে রাতে মারা যান অধ্যাপক ডা. মেজর (অব.) আবুল মোকারিম মো. মহসিন উদ্দিন। তিনি রাজধানীর ইবনে সিনা হাসপাতালের রেডিওলজি বিভাগের প্রধান ছিলেন। সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
সাংবাদিক:

করোনায় বেশ কয়েকজন সাংবাদিক মারা গেছেন, তাদের মধ্যে রয়েছেন- এনটিভির যুগ্ম বার্তা সম্পাদক আব্দুস শহিদ, দৈনিক সময়ের আলো পত্রিকার প্রধান প্রতিবেদক হুমায়ুন কবীর খোকন, দৈনিক ভোরের কাগজের স্টাফ রিপোর্টার (ক্রাইম) আসলাম রহমানসহ অনেকেই।
ইসলামিক অঙ্গন:

হেফাজতের আল্লামা আহমদ শফী:
গত ১৮ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) রাতে হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী মারা যান। তিনি স্বাভাবিকভাবে মারা গেছেন, নাকি তাকে হত্যা করা হয়েছে এটি নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। এ ঘটনায় মামলাও চলমান রয়েছে। তার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে হেফাজতের মধ্যে বিভক্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

মাওলানা নুর হোসেন কাসেমী:
গত ১৩ ডিসেম্বর মারা যান হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব ও জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা মাদরাসার মহাপরিচালক আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী। রাজধানীর গুলশানে ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
আইন অঙ্গন:

প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল-হক:
গত ২৪ অক্টোবর সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ও প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হক মারা যান। ঢাকার আদ-দ্বীন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ‍মৃত্যু হয় তার।
সাবেক এই অ্যাটর্নি জেনারেল সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ অনেক রাজনীতিবিদের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টে আইনি লড়াই করে আলোচনায় ছিলেন। নানা সামাজিক কর্মকাণ্ডেও নিজেকে রেখেছিলেন ব্যারিস্টার রফিক। আদ-দ্বীন হাসপাতালের চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। ১৯৯০ সালে বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল করা হয়েছিল তাকে। ব্যারিস্টার রফিক বিভিন্ন সময় ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম:
করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৭ সেপ্টেম্বর মারা যান অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তিনি রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন ছিলেন। ১৯৭৫ সালে হাইকোর্টে আইন পেশায় যুক্ত হন তিনি। তিনি ১৯৯৮ সালের ১৫ নভেম্বর থেকে ২০০১ সালের ৪ অক্টোবর পর্যন্ত অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেলের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এরপর ২০০৯ সালের ১৩ জানুয়ারি বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
শিল্পপতি:

ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমান:
গত ১ জুলাই বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমান কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে নিজ বাসভবনে মারা যান। লতিফুর রহমানের জন্ম জলপাইগুড়িতে, ১৯৪৫ সালের ২৮ আগস্ট। তিনি ঢাকায় থাকতেন গেন্ডারিয়ায়। পড়াশোনা শুরু সেন্ট ফ্রান্সিস স্কুলে। সেখান থেকে ১৯৫৬ সালে শিলংয়ের সেন্ট এডমন্ডস স্কুলে। তারপর কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে। ১৯৬৫ সালে ঢাকায় ফিরে আসেন লতিফুর রহমান। ঢাকায় এসে ১৯৬৬ সালে ডব্লিউ রহমান জুট মিল ট্রেইনি হিসেবে কাজ শুরু করেন। দেড় বছর কাজ শেখার পর নির্বাহী হিসেবে যোগ দেন। এভাবে কাজ করেন ১৯৭১ সাল পর্যন্ত। ১৯৭২ সালে তিনি সবকিছু নতুন করে শুরু করেছিলেন প্রায় শূন্য হাতে। নিজের হাতে তৈরি বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়িক গ্রুপ ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান ছিলেন। ট্রান্সকম গ্রুপে এখন কাজ করছেন ১০ হাজারের বেশি মানুষ। ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে নীতি-নৈতিকতা, সুনাম আর সততার স্বীকৃতি হিসেবে ২০১২ সালে তিনি পান বিজনেস ফর পিস অ্যাওয়ার্ড, যা ব্যবসা-বাণিজ্যের জগতে নোবেল বলে খ্যাত।

যমুনা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা নুরুল ইসলাম বাবুল:
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ১৩ জুলাই দেশের অন্যতম শীর্ষ ব্যবসায়ী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বাবুল মারা যান। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন এই বরেণ্য শিল্পপতি। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।

শিল্প উদ্যোগতা আব্দুল মোনেম:
সুপরিচিত শিল্পগোষ্ঠী আবদুল মোনেম লিমিটেডের (এএমএল) প্রতিষ্ঠাতা আবদুল মোনেম গত ৩১ মে মারা যান। মস্তিস্কে রক্তক্ষরণ হওয়ায় গত ১৭ মে তাকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করা হয়েছিল। তিনি কিডনির রোগেও ভুগছিলেন।
পার্টেক্স গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা এম এ হাসেম:
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ডিসেম্বর দেশের বিশিষ্ট শিল্পপতি, পারটেক্স গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান এম এ হাসেম। করোনা পজিটিভ আসার পর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত ১৬ ডিসেম্বর থেকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।

এসআলম গ্রুপের পরিচালক মোরশেদুল আলম:
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২২ মে জুন এস আলম গ্রুপের পরিচালক মোরশেদুল আলম মারা যান। চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। মোরশেদুল এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদের বড় ভাই। তিনি এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
সামরিক ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী:

নৌবাহিনীর সাবেক প্রধান মোহাইমিনুল ইসলাম:
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ১৪ জুলাই রাতে মারা যান সাবেক নৌবাহিনী প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ মোহাইমিনুল ইসলাম। ঢাকার সম্মিলিত সামরিক (সিএমএইচ) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। তিনি ১৯৯১ সালের ৪ জুন নৌপ্রধান হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করার পর ১৯৯৫ সালের ৩ জুন পর্যন্ত দীর্ঘ ৪ বছর নৌপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
সিএমডি’র সাবেক পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শহীদুল্লাহ:

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৫ জুলাই কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের (সিএমএসডি) সাবেক পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মোহাম্মদ শহীদ উল্লাহ মারা যান। ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

উপ-পুলিশ কমিশনার মিজানুর রহমানের মৃত্যু:
করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ১৩ জুলাই ভোরে মারা যান চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের নগর গোয়েন্দা (দক্ষিণ) বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. মিজানুর রহমান। রাজধানী ঢাকায় রাজারবাগে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
অন্যান্য:

সাবেক মন্ত্রীপরিষদ সচিব সা’দত হুসাইন:
গত ২২ এপ্রিল রাতে মারা যান সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব, পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান সা’দত হুসাইন। তিনি ২০০২ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত মন্ত্রিপরিষদ সচিবের দায়িত্বে ছিলেন। ২০০৭ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

Please Share This Post in Your Social Media




All rights reserved by Daily Shahnama
কারিগরি সহায়তা: Next Tech