বিজ্ঞপ্তি:
দৈনিক শাহনামার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। জাতীয়, রাজনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন সহ সকল সংবাদের সর্বশেষ আপডেট জানতে ভিজিট করুন www.shahnamabd.com

কালের আবর্তে হারিয়ে যাচ্ছে চৈত্র মাসের গ্রাম বাংলার ‘ নীল নাচ’

কালের আবর্তে হারিয়ে যাচ্ছে চৈত্র মাসের গ্রাম বাংলার ‘ নীল নাচ’

উপকূলীয় জনপদ বরগুনার জেলার বেতাগী উপজেলার চৈত্র মাসের শেষের দিকে প্রত্যন্ত গ্রাম বাংলায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়ির উঠোন কিংবা হাটবাজারে দেখা মিলছে নীল নাচের দলের পরিবেশনা। কিন্তু কালের পরিক্রমায় এ দলগুলো বেশ সংকুচিত হয়ে এসেছে। নীল নাচ ঠিক আগের মতো যত্রতত্র দেখা মিলছে না।

জানা গেছে, প্রাচীন কাল থেকে এ বেতাগী উপজেলায় চৈত্র মাসের তৃতীয় সপ্তাহে গ্রামের বাড়িতে ‘নীল নাচ’ দেখা মিলতো। প্রতিটি নীল নাচের দলে ১০/১২ জনের রাধা, কৃষ্ণ, শিব, পার্বতী, নারদসহ সাধু পাগল (ভাংরা) সেজে সকাল থেকে মধ্য রাত অবধি নীল নাচ গান পরিবেশন করেন। গ্রাম বাংলার সকল মানুষের কাছে দারুণ উপভোগ্য এই নীল নাচ। নীল নাচ দেখার জন্য এলাকার সকল পেশার মানুষ জড়ো হতো।

বিনোদনের এবং ধর্মীয় হিসেবে মনের যথাযথ চাহিদা মিটতো। চৈত্র সংক্রান্তি মেলার শেষ দিনে নীল পূজা শেষে শেষ হতো এ নীল নাচ। নীল পূজার জন্য নীল নাচের দল বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাল, ডাল আর নগদ অর্থ সংগ্রহ করে। নীল পূজা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ( হিন্দু) ধর্মীয় উৎসব হলেও চৈত্র সংক্রান্তির উৎসব এক সময় তা সার্বজনীন এক উৎসবে পরিণত হয়।

বেতাগীর কবিরাজ বাড়ির মাঠে গ্রামের শত বছর ধরে নীল পূজা ও মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব মেলায় নীল নাচ পরিবশেন হয়েছে। নীল নাচ ঠিক আগের মতো যত্রতত্র দেখা মেলে না। কালের পরিক্রমায় বাঙালির এ ঐতিহ্যের সংস্কৃতি বিলুপ্তির দিকে যাচ্ছে।

এ বিষয় নীল নাচের জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী সদানন্দ দেবনাথ জানান,’ নীল নাচের শিল্পীদের সংগ্রহ করতে যে পরিমান টাকা খরচ হয় তা কাটিয়ে উঠা সম্ভব না। ফলে বন্ধ করে দিয়েছি নীল নাচ। ‘

এ নীল নাচের দলের শিল্পী রমেশ দাস জানান, চৈত্র মাসের তৃতীয় ও চতুর্থ সপ্তাহ ধরে ১২ সদস্যের নীল দল গ্রামাঞ্চলে নাচ গান করে মানুষের মনোরঞ্জন করে। নীল পূজা কমে যাচ্ছে। সেই সাথে নীল দলের নাচও তেমন আর দেখা মিলছে না। ঐতিহ্যের এ নীল নাচ ক্রমেই বিলপ্তির দিকে যাচ্ছে।

এ বিষয় বেতাগী সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও বাংলা বিভাগের বিভাগী প্রধান মনোরঞ্জন বড়াল বলেন,’ এক সময় এ অঞ্চলে চৈত্রের শেষে নীল নাচ ও পূজা হতো। কালের আবর্তে হারিয়ে গেলেও সংশ্লিষ্টদের এ সংস্কৃতি ধরে রাখতে এগিয়ে আসা দরকার। ‘

Please Share This Post in Your Social Media




All rights reserved by Daily Shahnama
কারিগরি সহায়তা: Next Tech