বরিশাল প্রতিনিধি:
বরিশালে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা ও সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে বাসে অতিরিক্ত যাত্রী তোলার প্রতিবাদ করায় শিশুসহ একই পরিবারের চার জনকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে শ্রমিকদের বিরুদ্ধে। গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বরিশাল রুপাতলী বাস টার্মিনালে এ ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গেলে শ্রমিক নেতারা ঐ যাত্রীদের নতুন জামাকাপড় কিনে দিয়ে মারধরের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়া চেষ্টা চালান। তবে মারধরের শিকার পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার টিকিকাটা গ্রামের মৃত নূর মোহাম্মদ সিকদারের ছেলে শামীম সিকদার (২৭), তার মা হাসনুর বেগম, ভাগ্নে-বৌ কারিমা ও ভাগ্নের সাত বছরের শিশুকন্যা মুনিয়া। শামীম সিকদার বলেন, পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার বাসিন্দা হলেও কর্মসূত্রে বরিশাল নগরীর ২৬ নম্বর ওয়াডের কালিজিরা এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করেন।
সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তিনি তার মা,ভাগ্নে-বৌ ও ভাগ্নের সাত বছরের শিশুকন্যাকে নিয়ে মঠবাড়িয়ার উদ্দেশে রওয়ানা দেন। রুপাতলী বাসস্ট্যান্ডে এসে ২৪০ টাকা দিয়ে প্রতিটি টিকিট কাটেন এবং বাসে ওঠেন। কিন্তু নিয়মানুযায়ী বাসের প্রতি দুই আসনের একটি খালি রাখার কথা থাকলেও সুপারভাইজার কোনো সিটই খালি রাখেননি। পাশাপাশি যাত্রীদের দাঁড় করিয়েও নিচ্ছেন। কিন্তু ভাড়া দেড়শ টাকা স্থলে ২৪০ টাকা নিয়ে ঝুঁকিতে যাত্রী পরিবহন করার প্রতিবাদ করলে সুপারভাইজার ক্ষিপ্ত হন।
এরপর সুপারভাইজার, হেলপারসহ বাসস্ট্যান্ডের ১০/১৫ জন শ্রমিক মিলে বাসের ভিতরেই আমাকে মারধর করে। আমাকে বাঁচাতে গেলে শ্রমকিরা আমার মা, ভাগ্নে বৌ কারিমাকে লাঞ্ছিত ও হেনস্তা করেন। ভাগ্নের সাত বছরের মেয়ে মুনিয়াকে হেলপার বাস থেকে ছুড়ে নিচে ফেলে দেয়। যাত্রী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঝালকাঠি বাস মালিক সমিতির মাহিম পরিবহনের (গাড়ি নম্বর ঢাকা মেট্রো ব-১৪৪৯৯৮) সুপারভাইজার মুন্নার নেতৃত্বে ব্যাপক মারধর করা হয়।
যাত্রী মারধরে শুধু ঝালকাঠি বাস মালিক সমিতির শ্রমিকরাই নয় রুপাতলী বাস মালিক সমিতির শ্রমকিরাও অংশ নেন। ঐ যাত্রীকে সপরিবারে মারধরের পর বাসটি স্ট্যান্ড ছেড়ে ঠাসাঠাসি করে যাত্রী নিয়ে মঠবাড়িয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
রুপাতলী বাস মালিক সমিতির লাইন সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন শামীম বলেন, আমি ঘটনা শুনেছি এবং মারধরের শিকার যাত্রীকে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে রুপাতলী বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওছার হোসেন শিপন জানান, যতটুকু জেনেছি যাত্রীর সঙ্গে তর্কাতর্কি বাসস্ট্যান্ডে হয়েছে, তবে মারধরের ঘটনা স্ট্যান্ডের বাইরে সড়কে হয়েছে। আর যেহেতু বাসটি ঝালকাঠি বাস মালিক সমিতির তাই তাদের বিষয়টি জানিয়েছি, তারা ব্যবস্থা নেবেন।