করোনার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকাকালীন সময়ের সেশন চার্জসহ অন্যান্য ফি মওকুফ করার দাবিতে বরিশালে বিক্ষোভ এবং মহাসড়ক অবরোধ করেছে শিক্ষার্থীরা।
বরিশাল সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজের বিভিন্ন বিভাগের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এই বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় শিক্ষার্থীরা করোনাকালীন সময়ে অযৌক্তিক ফি প্রত্যাহার করার দাবি জানান।
এদিকে, শিক্ষার্থীদের টানা আড়াই ঘণ্টা মহাসড়ক অবোরেধের ফলে মহাসড়কে দির্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। দুর্ভোগে পড়েন হাজারো মানুষ। বিশৃঙ্খলা রোধে অবরোধের সময় কঠোর অবস্থানে ছিলো পুলিশ। শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করে এই সমস্যার সমাধান করার কথা বলেন হাতেম আলী কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মু. মুস্তফা কামাল।
করোনার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকাকালীন সময়ের সেশন চার্জসহ অন্যান্য ফি মওকুফ করার দাবিতে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের চৌমাথা অবরোধ করে হাতেম আলী কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা ব্যানার এবং প্লাকার্ড প্রদর্শন করে বিক্ষোভ করে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, করোনায় অনেক শিক্ষার্থীর বাবা-ভাই চাকরি হারিয়েছে। তাদের আয় রোজগার বন্ধ। আয় রোজগার বন্ধ থাকায় অনেক শিক্ষার্থীর পরিবারে চুলা জ্বলে না। তারা অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন। এ অবস্থায় অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ফরম পূরণে একগাদা (৫৫০০ থেকে ৬০০০ টাকা) ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। যা করোনাকালে শিক্ষার্থীদের কাছে বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। করোনাকালে এত টাকা দিয়ে ফরম পূরণ করা তাদের পক্ষে অসম্ভব।
এদিকে সকাল ১১টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করায় ওই সড়কের দুই দিকে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন হাজারো যাত্রীসহ পরিবহন শ্রমিকরা। তাদের কেউ কেউ শিক্ষার্থী আন্দোলনের সমর্থন দিলেও জনভোগান্তির কথা স্বীকার করেন।
দীর্ঘ আড়াই ঘণ্টার অবরোধকালে কঠোর অবস্থানে ছিলো পুলিশ। জনদুর্ভোগ থেকে রেহাই পাবার জন্য পুলিশ শিক্ষার্থীদের অবরোধ প্রত্যাহারের অনুরোধ করে।
কোতয়ালী মডেল থানার ওসি জানান, শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করেছিলো। অধ্যক্ষের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে আড়াই ঘণ্টা পর দুপুর দেড়টার দিকে তারা মহাসড়ক অবরোধ তুলে নেয়। এরপর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
অপরদিকে সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মু. মোস্তফা কামাল বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র অনুযায়ী ফি আদায় করা হচ্ছে। বাড়তি কোন ফি আরোপ করা হয়নি। এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করে যথাযথ সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা বলেন অধ্যক্ষ।
এর আগে গত বুধবার একই দাবিতে সড়ক অবরোধ এবং বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করে বিএম কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা।