রাজাপুর প্রতিনিধি:
ঝালকাঠির রাজাপুরের টিঅ্যান্ডটি সড়কের মৃত আব্দুল খালেকের স্ত্রী হোসনেয়ারা বেগম বকুলের (৫৫) শরীরে থাকা সোনার গহনার লোগেই তাকে গলাকেটে হত্যা করা হয়। হত্যার ঘটনায় গ্রেফতারকৃত আসামী শাকিল ভুইয়া ৫ দিনের রিমান্ডে পুলিশের কাছে এ তথ্য জানিয়েছে বলে বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজাপুর থানার এসআই শাহ আলম নিশ্চিত করেছেন। শাকিল নারায়নগঞ্জের গোগনগর মশিনাবান্ধ গ্রামের বড় মসজিদ এলাকার শাহিন ভুইয়ার ছেলে। পুলিশ জানায়, রিমান্ডে আসামী শাকিলের শিকারোক্তি অনুযায়ী হত্যায় ব্যবহৃত দাড়ালো চাকু ও পরিত্যক্ত ওই ঘরের চাবি এবং বকুলের হাতের বালা ও একটি আংটির গলানো সোনার পিন্ড উদ্ধার করা হয়েছে। যে পরিত্যক্ত ঘর থেকে বকুলের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়েছিলে, সেই ঘর সংলগ্ন উত্তর পাশের বাড়ির পথের মাটির মধ্যে পুতে রাখা অবস্থায় ২৩ আগষ্ট সকালে চাকু উদ্ধার করা হয় এবং তার পাশের একটি পরিত্যক্ত জমির ঝোপঝাড়ের মধ্য থেকে চাবি উদ্ধার করা হয়। ১৮ আগস্ট নারায়নগঞ্জ ভুইয়াপাড়া এলাকার শাকিলের চাচাতো ভাই লিটনের বাসা এলাকা থেকে শাকিলকে গ্রেফতার করা হয় এবং তার দেয়া তথ্য মতে, নারায়নগঞ্জের কালির বাজার নওয়াব প্লাজার একটি জুয়েলার্স থেকে বকুলের হাতের বালা ও একটি আংটির গলানো সোনার পিন্ড উদ্ধার করা হয়। ২০ আগস্ট ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন করলে আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ২৫ আগস্ট বুধবার রিমান্ড শেষে পুলিশ আসামী শাকিলকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রাজাপুর থানার এসআই শাহ আলম জানান, শাকিল ও দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামের বলাইবাড়ি এলাকার মৃত কাঞ্চন ফরাজির মেয়ে মনিকা নারায়নগঞ্জ একই গার্মেন্টেসে চাকুরির সুবাদে প্রেমের সম্পর্কের মাধ্যমে বিয়ে হয়। বিয়ের পর শাকিল স্ত্রী নিয়ে রাজাপুর বাইপাস এলাকায় ভাড়া থাকাকালিন হোসনেয়ারা বেগম বকুলের সাথে পরিচয় হয়। পরবর্তীতে ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়লে শাকিল ঝালকাঠিতে বাসা ভাড়া নেয় এবং সেখানেও ঋণগ্রস্থ হলে ৭ই আগস্ট রাজাপুর টিঅ্যান্ডটি সড়কের মুকুলের বাসার পূর্ব পাশের একটি বাসায় ভাড়ায় উঠেন। একই এলাকায় থাকার সুবাদে শাকিল ও বকুল উভয়ের বাসায় যাতায়াত ছিল। এসআই শাহ আলম আরও জানান, শাকিল ঋনের টাকা পরিশোধ করার জন্য বকুলের সাথে থাকা সোনার গহনা নেয়ার লোগে খুনের পরিকল্পনা করে। সে অনুযায়ী ১৩ আগস্ট সন্ধ্যারাতে বকুলকে তার পরিত্যক্ত ঘর ভাড়া দেয়ার জন্য দেখার নাম করে বকুলকে সেই ঘরে নিয়ে আসে। বকুল তালা খুলে ঘরে প্রবেশ করার সাথে সাথেই বকুলের গলা চেপে ধরে শ^াসরোধ করে এবং শাকিলের সাথে থাকা চাকু নিয়ে গলাকেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে তার শরীরে থাকা সোনার গহনা নিয়ে ঘরে তালাবন্ধ করে রাতেই নারায়নগঞ্জ পালিয়ে যায়। নারায়নগঞ্জে যাবার সময় লঞ্চে বসে বকুলের মোবাইল ফোন নদীতে ফেলে দেয়। নারায়নগঞ্জ গিয়ে ছদ্মবেশ ধরতে মাথা ন্যাড়া করে ফেলে। পরের দিন ১৪ আগস্ট রাজাপুর থানা পুলিশ ওই পরিত্যক্ত ঘর থেকে বকুল বেগমের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে এবং ওই দিন রাতে বকুলের ছেলে শফিকুল ইসলাম লিটন বাদি হয়ে অজ্ঞাতদের আসামী করে রাজাপুর থানায় মামলা (নং-৮) দায়ের করে।