বিজ্ঞপ্তি:
দৈনিক শাহনামার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। জাতীয়, রাজনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন সহ সকল সংবাদের সর্বশেষ আপডেট জানতে ভিজিট করুন www.shahnamabd.com

ওসির ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন মঠবাড়িয়ার জাপা নেতা: সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ

ওসির ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন মঠবাড়িয়ার জাপা নেতা: সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় সাধারন মানুষকে বিভিন্ন মামলায় জড়িয়ে তাদের গ্রেফতার করে আবার ছাড়িয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ জন্য সাবেক বিএনপি নেতা ডাকাতি, চোরাকারবারী ও মাদকসহ একাধিক মামলার আসামী ছগির মেম্বার (সাবেক) এবং তুষখালীর চেয়ারম্যান শাহজাহান হাওলাদার মঠবাড়িয়া থানার ওসি নুরুল ইসলাম বাদলের সাথে সখ্যতা গড়ে এ ধরনের অনৈতিক কর্মকান্ড চালিয়ে আসছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

সোমবার দুপুরে শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাবে এ অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী উপজেলার তুষখালী গ্রামের বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম। তিনি তার জীবনের নিরাপত্তায় এখানে আসতে বাধ্য হয়েছেন বলে সাংবাদিকদের অবহিত করেন।

এ ব্যাপারে স্বরাস্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি, বরিশাল ডিআইজি, পিরোজপুর জেলা পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার পাননি বলে জানান শফিকুল।

শফিকুল বলেন, আমার সাথে দ্বন্দ্ব শুরু হয় বলেশ্বর নদীতে সাধারন ছেলেদের কাছ থেকে ছগির মেম্বরের চাঁদা উত্তোলনকে কেন্দ্র করে। চাঁদা উত্তোলন করে তা ওসি ও চেয়ারম্যানকে ভাগা দিতো। এতে বাধ সাধলে আমার বিরুদ্ধে শুরু হয় ষড়যন্ত্র। একইভাবে যারাই তাদের বিরুদ্ধাচারন করে তাদেরকেই গ্রেফতার করে টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দিয়ে সাবধান করে দেয়া হয়।

গত ২১ জুলাই সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে মঠবাড়ীয়া থানার এসআই পলাশ চন্দ্র রায় তুষখালী বাজার মমতাজ মার্কেটের সামনে ওসি থানায় যেতে সালাম জানিয়েছেন বলে জানান। না যেতে চাইলে এসআই পলাশ ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে গালাগাল করেন এবং গলা ধাক্কা দিয়ে থানার পিকআপ ভ্যানে তুলে নিয়ে যায়। থানায় নেওয়ার পরে ওসি বাদল এর সামনে হাজির করে। ওসি বলেন তোর নামে অনেক অভিযোগ। তুই এলাকার কাউকে মান্যগন্য কর না, এলাকার চেয়ারম্যানকে তোয়াক্কা কর না, ছগির মেম্বারের কথা শোন না।

এরপর ওসি ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। টাকা দিলে তোকে ছেড়ে দেব, আর কোন অভিযোগ থাকবে না। আমি বাড়ীতে মোবাইল করলে আমার স্ত্রী সালমা বেগম বাসা থেকে ১৫ হাজার টাকা নিয়ে থানায় আসে এবং আমার কাছে দেয়। সেই টাকা থেকে ওসিকে ৬ হাজার এবং এসআই পলাশ চন্দ্র রায়কে ৩ হাজার টাকা দেই। উক্ত টাকা পাওয়ার পর ওসি জানান তোকে ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য ছগির আসছে। উক্ত কথা বলতে না বলতেই ছগির ও ইউপি চেয়ারম্যান শাজাহানের ছেলে শামিম ওসির রুমে প্রবেশ করে।

ওসিকে আমি বলি আমাকে ধরিয়ে সে আবার আমাকে ছাড়াবে এটা কেমন বিষয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রাত ১১টার দিকে থানার ভিতরে ওসির সামনে আমাকে বেদম মারধর করে ছগির। মারধর শেষে রাত সাড়ে ১১টার দিকে থানা হাজতে রাখা হয় এবং ছগির মেম্বারের নির্দেশে ছোট মাছুয়া নিবাসী তাসলিমা বেগমকে বাদী করে মারামারির মিথ্যা মামলায় পরের দিন কোর্টে প্রেরণ করা হয়। ওই মামলায় ২০দিন জেল খেটে বর্তমানে জামিনে রয়েছি। এরপরও ওসিসহ ওই তিনজন আমাকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছে। তাদের হয়রানিতে আমি দিশেহারা হয়ে পড়েছি।

তিনি বলেন, তুষখালী ইউপি চেয়ারম্যান শাজাহান আন্তর্জাতিক চোরাকারবারি চক্রের অন্যতম সদস্য। ২০০৭ সালে সে বঙ্গোপসাগর হয়ে সুন্দরবনের উপকুলীয় এলাকায় ভারত থেকে আনা ৫ কোটি টাকার ভারতীয় কাপড়সহ কোষ্টগার্ডের হাতে ধরা পরে জেল খেটে আবার জামিনে বের হয়।

ছগির মেম্বার ও শামিম মঠবাড়ীয়া থানার কুখ্যাত ডাকাত ও চোরা কারবারী। ছগির মেম্বারের বিরুদ্ধে মঠবাড়ীয়া থানায় ৪টি মামলা রয়েছে। এছাড়াও পিরোজপুর সদর থানায় মামলা রয়েছে। ঢাকা মতিঝিল থানায় তার নামে সন্ত্রাস বিরোধী ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে ১টি মামলা রয়েছে। যা ডিবি পূর্ব বিভাগ ডিএমপি তদন্তাধীন আছে। তার বিরুদ্ধে বন নিধন আইনে একাধিক মামলা রয়েছে।

ছগির মঠবাড়ীয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সমাজকল্যান বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামীলীগ নেতাদের সাথে সখ্যতা গড়ে আওয়ামীলীগ নেতা বনে যান।

তারা আমিসহ (শফিকুল) সাধারন মানুষকে হয়রানি করে আসছে। তাদের থানায় ধরে নিয়ে যায়। আবার ছগির গিয়ে ছাড়িয়ে নিয়ে আসে। এভাবে চলছে ওসি নুুরুল ইসলামের সাথে একাধিক মামলার আসামীদের অনৈতিক কর্মকান্ড। আমি ওই সকল ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকায় আমাকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করছে ওসিসহ তার মদদদাতারা। যে কোন সময় আমাকে হত্যা করে গুম করা হতে পারে বলে আশংকা করছেন তিনি।

এ ব্যাপারে মঠবাড়িয়ায় থানার ওসি নুরুল ইসলাম বাদল বলেন, ঘুষ চাওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়। অভিযোগকারী শফিকুল ইসলামের সাথে থানায় বসে ছগির মেম্বারের সমঝোতার এক পর্যায়ে ছগির মেম্বার মারতে উদ্ধত হলে তাকে আমি নির্বৃত্ত করেছি। এর বেশী কিছু আমার জানা নেই।

Please Share This Post in Your Social Media




All rights reserved by Daily Shahnama
কারিগরি সহায়তা: Next Tech