স্পোর্টস ডেস্ক :
২০১৪, বিশ্বকাপের ম্যাচে কলম্বিয়ার বিপক্ষে খেলছিলেন নেইমার। কোয়ার্টারফাইনালের সেই ম্যাচে কলম্বিয়ার ডিফেন্ডার হুয়ান সুনিগারের হাঁটুর আঘাতে নেইমারকে তীব্র যন্ত্রণা নিয়ে স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়তে হয়।
তখনকার ২২ বছর বয়সী এই ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টারের ক্যারিয়ার নিয়েই দেখা দিয়েছিল শঙ্কা। সেই চোট নেইমারকে অনেক দিন ভুগিয়েছে। আর ব্রাজিলকে দিতে হয়েছিল চড়া মাশুল। সেবার জার্মানির সেমিফাইনালের ম্যাচে সেলেসাওরা হেরেছিল ৭-১ গোলে।
তারপর থেকেই মাঠে ফিরে বদলে গেলো নেইমারের আচরণ। তিনি পলকা আঘাতেই পড়ে যেতে শুরু করলেন, একটুতেই করতে থাকলেন অদ্ভুত ভঙ্গি। নেইমারের এমন অতি অভিনয়ে অতিষ্ট হয়ে উঠলো ফুটবল দুনিয়া। অনেকে তো তাকে ফুটবলার নয় অভিনেতা তকমা দিয়ে অস্কার দেওয়ার দাবিও তুলেছেন।
নানা মাধ্যমে নেইমারকে নিয়ে চলছে নানা ট্রল। অভিনয়ের আড়ালে চাপা পড়ে গেল নেইমার নামের এক অমিত প্রতিভাবান ফুটবলারের গল্প। যার পায়ে আছে জাদু, খেলায় আছে তাক লাগানো ছন্দ। যিনি কারিকুরি আর গতিতে প্রতিপক্ষকে বোকা বানাতে পারেন সহজে।
১২১ আন্তর্জাতিক ম্যাচে ৭৫ গোল করেছেন নেইমার। তার আছে চারটা হ্যাট্রিকও। এক সময় নেইমার মেসিকেও ছাড়িয়ে যাবেন এমন ভাবতেন অনেকে। তবে অভিনয় আর চোটের কারণে তার ক্যারিয়ার দ্রুত গতিতে আগায়নি বরং তিনি মন্থর হয়ে গেছেন।
তবে পাল্টা যুক্তিও আছে অনেকে বলেন, ঘর পোড়া গরু যেমন সিঁদুরে মেঘ দেখলে ভয় পায়, নেইমারও তেমন। ২০১৪ সালের বিশ্বকাপের ওই চোট নেইমারের মনে একধরনের আতঙ্ক ঢুকিয়ে দিয়েছে, তাই তিনি মাঠে অতি সতর্ক থাকতে গিয়ে এমন অভিনয়ের আশ্রয় নেন। এটা নেইমারের আত্মরক্ষার কৌশল।
আবার নেইমারকে ঘিরে মাঠে ফাউলের ঘটনাও বেশি ঘটে। প্রতিপক্ষ তাকে আটকাতে চায়, সেই প্রতিরোধের খপ্পরে পড়ে স্বাভাবিকের চেয়েও বেশি ফাউলের শিকার হন নেইমার। যে কারণে বাধ্য হয়েই তাকে চোট এড়াতে কিংবা আঘাত থেকে রক্ষা পেতে হাঁটতে হয় এমন কৌশলী পথে।
নেইমার অভিনয় কিংবা আত্মরক্ষা যে পক্ষেই আপনি থাকেন, নেইমারের ফুটবল প্রতিভা নিয়ে প্রশ্ন তোলার উপায় কিন্তু নেই। নেইমারের সক্ষমতাকে বিশ্বের বাঘা বাঘা ফুটবল বোদ্ধারা শুরু থেকেই কুর্নিশ জানিয়ে আসছেন।