চলতি বিপিএলে ব্যাট হাতে ছন্দে ছিলেন সাকিব আল হাসান। সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় ছিলেন তৃতীয়তে। স্বাভাবিকভাবে এলিমিনেটর ম্যাচে তাই অধিনায়কের ব্যাটিং নিয়েই স্বপ্ন দেখেছিল ফরচুন বরিশাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় হলো এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ব্যাট হাতে নামেননি সাকিব। কিন্তু কেন নামেননি বরিশাল অধিনায়ক?
সাধারণত ওয়ান ডাউনে বেশি খেলেন সাকিব। আজ তিনে নামেননি, নামেননি চারেও। পরে আর দেখাই গেল না বরিশাল অধিনায়ককে। ওপেনিং জুটি ভাঙার পর তিনে মাহমুদউল্লাহকে পাঠান সাকিব, এরপর পাঠান করিম জান্নাতকে। পাঁচে দেখা যায় গতকালই (১১ ফেব্রুয়ারি) ঢাকায় পা রাখা রাজাপাকসেকে। যাদের ব্যাটে ভর করে রানটা একটু কমই করে ফেল বরিশাল। টিকে থাকার ম্যাচে স্কোরবোর্ডে মাত্র ১৭০ রান তোলে দলটি। যা দিয়ে জেতা সম্ভব হয়নি। ৪ উইকেটের জয় নিয়ে রংপুর চলে যায় কোয়ালিফায়ার রাউন্ডে। আর আসর থেকে বিদায় নিতে হয় বরিশালকে।
বরিশালের হারের পর প্রশ্ন উঠেছে সাকিবের ব্যাটিংয়ে না নামা নিয়ে। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে বরিশাল কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিম জানালেন, রানরেট বাড়ানোর ভাবনায় নিজে না নেমে অন্যদের পাঠান সাকিব।
নাজমুল আবেদীন বলেন, ‘এত ভালো একটি প্ল্যাটফর্ম পাওয়ার পর ওর (সাকিব) মাথায় বোধহয় এটি কাজ করেছিল যে, রাজাপাকসে বা করিমকে আগে পাঠিয়ে ফ্রি করে দিলে, ওরা যদি মুক্তভাবে খেলে, যত রানই করুক না কেন, সেটা যদি ভালো গতিতে করতে পারে, দলের কাজে আসবে তা। সে (সাকিব) শেষে গিয়ে ওর কাজটি করবে। তবে আমার মনে হয় না, সেই পরিকল্পনা কাজে দিয়েছে। করিমকে বা রাজাপাকসাকে আগে পাঠিয়ে আমরা যেটি প্রত্যাশা করেছিলাম, ওরা তা করতে পারেনি। সেটা উইকেটের কারণে হোক বা প্রতিপক্ষের ভালো বোলিংয়ের কারণে হোক কিংবা ওদের নিজস্ব ইন্টেন্টের অভাবে, ওরা করতে পারেনি। সে কারণেই আমরা পিছিয়ে গেছি। উদ্বোধনী জুটি বা তার পরে যে ভিত্তি আমাদের গড়া হয়েছিল, আমাদের সুযোগ ছিল প্রায় ১৯০ বা তা ছাড়িয়ে যাওয়ার। সেই ব্যাটিং শক্তি আমাদের ড্রেসিং রুমে ছিল। কিন্তু আমরা কাজে লাগাতে পারিনি।’
বরিশাল কোচ আরও বলেছেন, ‘এসবে আসলে অধিনায়কেরই সিদ্ধান্ত থাকে সাধারণত। এমন হতে পারে যে আমাদের সঙ্গে আলাপ করে নেয়। কিন্তু ও কমফরটেবল ফিল করছিল যে ওরা ভালো খেলোয়াড়, ওরা গিয়ে যদি দু-এক ওভারে রান বাড়িয়ে দিয়ে আসতে পারে। আমাদের সেরকম অবস্থা ছিল যে দু-এক উইকেট হারালে অসুবিধা হতো না। কিন্তু সেই সুযোগ আমরা সেভাবে কাজে লাগাতে পারিনি। তবে আমি মনে করি, সাকিব এখন যেভাবে ব্যাটিং করছিল, বিশেষ করে এই উইকেটে এবং এমন পরিস্থিতিতে, সেখানে সাকিবের চেয়ে ভালো কোনো অপশন আমার মনে হয় না আছে। খুব ভালো হতো, ও যদি নিজে খেলত এবং নিজের মতো করে খেলত, সেটা আমাদের জন্য বোধহয় ভালো হতো। এটা হয়তো সাকিবেরও এখন উপলব্ধি হচ্ছে। যেটা হয়ে গেছে, এখন আর আমরা ফেরত আনতে পারব না। তবে এটা একটি শিক্ষা।’
এদিকে সাকিবের ব্যাটিংয়ে না নামার বিষয়টি নিয়ে খানিকটা অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে বরিশাল মালিক পক্ষ। এ ব্যাপারে নিজেদের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে পোস্ট করে প্রশ্ন তোলে দলটি। যদিও কিছুক্ষণ বাদে সেই পোস্টটি আবার সরিয়ে দেয় ফরচুন বরিশাল।