স্পোর্টস ডেস্ক :
বিশ্ব ক্রিকেটে বড় অংশ জুড়ে জায়গা করে নিয়েছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল)। তারকাবহুল টুর্নামেন্টের সঙ্গে অর্থের ঝনঝনানিতে বিশ্বের সবচেয়ে দামি ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট লিগ আইপিএল।
বিশ্বব্যাপী অনেক ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ আয়োজিত হলেও আইপিএলের ধারেকাছেও যেতে পারেনি কোনোটি। বলা চলে, ক্রিকেট ভক্তদের তুমুল আগ্রহের নাম এখন আইপিএল। ভারতীয় লিগটির ১৬তম আসর মাঠে গড়াবে আজ (৩১ মার্চ) শুক্রবার।
পেছন ফিরে ১৬ বছর আগে যাই। ১৮ এপ্রিল ২০০৮। ভারতের ব্যাঙ্গালুরুতে মুখোমুখি হয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্স বনাম রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু। যাত্রা শুরু হলো এক ভিন্ন উদ্দীপনার। বিতর্কিত ক্রিকেট লিগ আইসিএলকে থামাতে শুরু হয় ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল)।
শুরুর সময়টায় আইপিএল কর্তৃপক্ষ কি জানতো, এতটা জনপ্রিয়তা পাবে তারা, যতটা হলে জাতীয় দলকেও পাশ কাটিয়ে আসতে দ্বিতীয়বার ভাববেন না কোনো ক্রিকেটার! বর্তমান সময়ে আইপিএলের কদরটা যে তেমনই। ১৬ বছর পর ধারেভারে, আয়োজনে ক্রিকেট দুনিয়ায় আইপিএলের প্রতিদ্বন্দ্বী কেবলই আইপিএল!
আজ উদ্বোধনী দিনে আহমেদাবাদে মুখোমুখি হবে গতবারের চ্যাম্পিয়ন গুজরাট টাইটান্স ও চেন্নাই সুপার কিংস। গুজরাটের প্রথম অংশগ্রহণ ছিল গত আসরে। ব্যাপারটা এমন—এলেন, দেখলেন, জয় করলেন! হার্দিক পান্ডিয়ার দুর্দান্ত অধিনায়কত্বে গতবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল গুজরাট। এবারও দায়িত্বে আছেন পান্ডিয়া। প্রথম দিনেই মাঠে নামবেন মহেন্দ্র সিং ধোনির চেন্নাই সুপার কিংসের বিপক্ষে। খেলোয়াড় হিসেবে ধোনির হয়তো সম্ভাব্য শেষ আইপিএল এটি। আইপিএলের অন্যতম সফল অধিনায়কের সঙ্গে সদ্য জেতা অধিনায়কের লড়াই দিয়েই শুরু হবে ৭০ ম্যাচের লম্বা গ্রুপপর্ব।
শক্তি-সামর্থ্যে বেশ ভারসাম্যপূর্ণ দল গুজরাট। ডেভিড মিলার, ম্যাথু ওয়েড, শুভমান গিল, ঋদ্ধিমান সাহা, কেইন উইলিয়ামসনদের নিয়ে বেশ সমৃদ্ধ ব্যাটিং তাদের। বল হাতে তৈরি তৈরি আছেন মোহাম্মদ শামি, রশিদ খান, রাহুল তেওয়াতিয়া, জয়ন্ত যাদবেরা। আর ব্যাট-বল দুটো নিয়েই তৈরি অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া। অন্যদিকে চেন্নাইয়ের সবচেয়ে বড় শক্তির জায়গাটা অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। অভিজ্ঞতায় ভরপুর ক্যাপ্টেন কূল যেকোনো সময় যে কাউকে দিয়ে কী কী করাতে পারেন, তা ভালো করেই জানা গোটা ক্রিকেট দুনিয়ার। ডেভন কনওয়ে ,আম্বাতি রাইডু, মিচেল স্যান্টনার, রবীদ্র জাদেজা, মঈন আলিদের নিয়ে চেন্নাইয়ের ভিতও যথেষ্ট মজবুত। তবে টি-টোয়েন্টি বলেই কি না প্রেডিকশন ব্যাপারটা মাঠের বাইরেই সুন্দর।
চলতি আইপিএলে পুরনো নিয়মে বেশ কিছু পরিবর্তন আনছে কর্তৃপক্ষ। তার মধ্যে একটি হলো দলগুলো টসের পর একাদশ চূড়ান্ত করতে পারবে। আরেকটি হলো ম্যাচের মাঝপথে খেলার পরিস্থিতি অনুযায়ী একজন খেলোয়াড় পরিবর্তন করতে পারবে দলটি। যাকে বলা হচ্ছে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার। এই দুই নিয়মে সব দলই পাবে বাড়তি সুবিধা। ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে এই দুই নিয়মই যথেষ্ট।
টি-টোয়েন্টির এই রমরমা সময়ে নবীন-প্রবীণ সবার নিজেকে প্রমাণের বড় জায়গা আইপিএল। নিজেদের তৈরি করে নিতে আইপিএল খুব ভালো প্ল্যাটফর্ম তাদের জন্য। বাংলাদেশ থেকে সাকিব আল হাসান ও লিটন দাস খেলবেন কলকাতা নাইট রাইডার্সে। দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে মাঠ মাতাতে তৈরি মুস্তাফিজুর রহমান।
৩১ মার্চ থেকে শুরু হতে যাওয়া গ্রুপপর্ব শেষ হবে ২১ মে। ১০ দলের মধ্য থেকে সেরা চার দল খেলবে প্লে-অফ রাউন্ড। ১০ টি দল, ৭০ টি ম্যাচ ও ৫০ দিনের লম্বা গ্রুপ জার্নি। লক্ষ্য একটাই, শিরোপা তুলে ধরা। তার আগে অবশ্যই দিতে হবে প্লে-অপ নিশ্চিত করার পরীক্ষা!