মোকাম্মেল হক মিলন, ভোলা:
মুক্তিযুদ্ধের জাদুঘর, দেয়ালের পর দেয়াল ভরে আছে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের ছবিসহ অসংখ্য জীবন্ত ছবি। ওই সব ছবির দিকে তাকাতেই আবেগে আপ্লুত হয়ে কান্নায় চোখে পানি এসে যায়। যা প্রকৃত দেশপ্রেমী মানুষের মনকে নাড়া দেয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ স্বাধীনতা সংগ্রামের আন্দোলনের ইতিহাসে বাংলাদেশের জন্মের ইতিহাস, মুক্তিযুদ আর ২৫ মার্চ ১৯৭১’র কাল রাত্রির নৃশ্বংস হত্যার ছবি সত্যি বিরল। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ আজো বাংলার মুক্তিযুদ্ধকে সম্মান প্রদর্শণ করছে উচ্চ আসনে রেখে।
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধেল নানা চিত্র সহকারে ভোলার গর্ব, অভিভাবক তোফায়েল আহমেদ এর এক অন্যন্য সৃষ্টি স্বাধীনতা জাদুঘর। ভোলার বাংলাবাজারে অবস্থিত স্বাধীনতা জাদুঘরকে ঘিরে জননেতা তোফায়েল আহমেদ বাংলাবাজারকে দৃস্টি নন্দন উপ-শহর হিসেবে সাজানোর পাশাপাশি তার মায়ের নামে একটি বিশাল কমপ্লেক্স করেছেন। এখানে ফাতেমা খানম কলেজ, বৃদ্ধাশ্রম, অসাধারণ নৈপুন্যময় মসজিদ ও ক্যাম্পাস, নির্মানাধীন আজাহার-ফাতেমা খানম মেডিকেল কলেজ। ভোলাবাসীর প্রাণের দাবী ছিল কবে হবে ভোলার মানুষের স্বপ্নে মেডিকেল কলেজ। সেই স্বপ্ন পূরণ করতে যাচ্ছেন তোফায়েল আহমেদ। তাছাড়া এখানে সুপরিকল্পিতভাবে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের গবাদি পশু, ও সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, আইসিটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সদর দপ্তর, ফাতেমা খানম গার্লস স্কুল, সরকারী শিশু পরিবার (বালক) এবং মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রসহ নানান প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। এ অঞ্চলের মানুষের সেবায় আধুনিক শপিং সেন্টারও নির্মাণ করে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ স্থাপন করেছেন।
৬৯’র মহানায়ক, সাবেক মন্ত্রী ও বর্তমান সাংসদ তোফায়েল আহমেদ ভোলায় গ্যাস ভিত্তিক শিল্প-কারখানা স্থাপন, ২২৫ মেঘাওয়াট করে ২টি গ্যাস ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন, দেশের বৃহত্তম ভোলা-বরিশাল সেতু নির্মাণের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। এসব স্বপ্ন বাস্তবায়নে তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সচিব এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করছেন। যত দ্রুত সম্ভব ভোলাবাসীর স্বপ্ন পূরণ করা, তার জন্য চীন, জাপান, সাইকা, সৌদিআরবসহ বিভিন্ন দেশের সাথে যোগাযোগ রাখছেন তিনি। শুধু তাই নয় মুক্তিযুদ্ধের দীর্ঘ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলার স্বাধীনতার লাল-সবুজের পতাকা আমাদের হাতে তুলে দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রম হারানোসহ অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষা ও রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশের পূর্ণ ইতিহাস সংগ্রামের চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করে যাচ্ছেন তোফায়েল আহমেদ।
বিশ্বয়কর এক সংগ্রহ বঙ্গবন্ধুকে দু’হাত ধরে মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছে হাস্যোজ্জ্বল তরুণ তোফায়েল আহমেদ। ৬৯ সালের সেই ছবি এখনও জীবন্ত ইতিহাসের স্বাক্ষী। বহু দিনের পরিশ্রম আর যতেœ সংগ্রহ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর দুর্লভ ছবি, নথি আর স্বাধীনতার অনেক অজানা তথ্য আর দলিল। নানান রকম বহু আনন্দ-বেদনার ছবিতে ভরে আছে জননেতা তোফায়েল আহমেদ এর অপূর্ব সৃষ্টি সেই স্বাধীনতা জাদুঘর।
জাদুঘরটি ঘুরে দেখে বিষ্মিত হয়েছি। ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংরক্ষিত অনেক নথি, কত দলিল আর হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ডিজিটাল পদ্ধতিতে জীবন্ত ছবি সমূহ। এখানে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাঁসি মুখের ছবিসহ স্থান পেয়েছে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার স্বজন হারানো কষ্ট নিয়ে বাংলার মাটিতে পা রেখে শোকে মুর্হ্যমান। আকাশের দিকে দু’হাত তুলে তার সেই বেদনার্ত মুখের ছবি, ২১ আগষ্টের গ্রেনেড হামলার ছবি, বঙ্গবন্ধু কন্যর স্থম্ভিত মুখ প্রভৃতি।
ভোলার বাংলাবাজার আলোকিত করে আছে স্বাধীনতা জাদুঘর। এ জাদুঘরকে ঘিরে প্রতিদিন কয়েক শতাধিক মানুষ দর্শন করছে। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছেন দ্বীপ সিংহ তোফায়েল আহমেদকে। পর্যটন ও বিনোদন সেন্টার হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের জাদুঘরটি প্রতিবছর স্কুল, কলেজ, মাদরাসা শিক্ষার্থীদের নিয়ে শিক্ষা সফরে আসতে পারেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানগণ। আর জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন এমন চমৎকার জাদুঘর আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ভভিষ্যত প্রজন্ম স্ব-চক্ষে ঘুরে দেখে অন্যরকম এক অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে পারবে এ প্রত্যাশা। ইতিমধ্যে বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সাবেক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, কালের কণ্ঠের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, আমাদের সময়ের সম্পাদক নঈম নিজাম, সাংসদ ও ফোক শিল্পী মমতাজসহ অসংখ্য গুনি ব্যক্তিরা মুক্তিযুদ্ধের এ জাদুঘর ঘুরে দেখে তোফায়েল আহমেদের এ অনন্য সৃষ্টির প্রশংসা করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানতে আপনার সন্তান, পরিবার তথা দেশের গুনিজনদেরকে এখানে নিয়ে আসার জন্য সবিনয় অনুরোধ করছি।