বিজ্ঞপ্তি:
দৈনিক শাহনামার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। জাতীয়, রাজনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন সহ সকল সংবাদের সর্বশেষ আপডেট জানতে ভিজিট করুন www.shahnamabd.com

অতিবর্ষণে আমতলীতে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা। তলিয়ে গেছে মাছের ঘের ও আমনের বীজতলা।

অতিবর্ষণে আমতলীতে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা। তলিয়ে গেছে মাছের ঘের ও আমনের বীজতলা।

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি ।
অতিবর্ষণে আমতলী উপজেলায় ভয়াবহ জলাবন্ধতা দেখা দিয়েছে। তলিয়ে গেছে ৬ হাজার ৪৫ টি পুকুর ও মাছের ঘের। মাটি আগলা হয়ে উপড়ে পরেছে অন্তত সহাস্রাধীক বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা। পানির নীচে আউশের ধান ক্ষেত ও আমনের বীজতলা। দ্রুত পানি নিস্কাশন না হলে অন্তত কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হবে।
জানাগেছে, গত ২৪ ঘন্টার ২’শ ৬২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত বেকর্ড করা হয়েছে বলে কলাপাড়া আবহাওয়া অফিস সুত্রে জানাগেছে। বিরামহীন ভারী বৃষ্টিপাতে আমতলী উপজেলায় ভয়াবহ জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। জলকপাট দিয়ে তেমন পানি নিস্কাশন হচ্ছে না। তলিয়ে গেছে উপজেলায় ছয় হাজার ৪৫ টি পুকুর ও মাছের ঘের। এতে এক কোটি টাকার ক্ষতি হবে বলে উপজেলা মৎস্য অফিস সুত্রে জানাগেছে। জলাবদ্ধতায় উপজেলার এক হাজার ৯’শ ২৯ হেক্টর আমনের বীজতলা এবং ১০ হাজার ৫’শ হেক্টর আউশ ধানের ক্ষেত তলিয়ে গেছে। বৃষ্টিতে আউশ ধানের পরাগায়ন বন্ধ হয়ে ধান চিটা হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান কৃষি অফিসার সিএম রেজাউল করিম। পানিতে তলিয়ে থাকায় কৃষকের চাষাবাদ প্রায় বন্ধ। ভারী বৃষ্টিপাতে মাটি আগলা হয়ে অন্তত এক হাজার বিভিন্ন প্রজাতির গাছ উপড়ে পরেছে। উপজেলা পরিষদের অভ্যান্তরে ১১ টি বিভিন্ন প্রজাতির গাছ উপড়ে সড়কে পড়ে থাকায় মানুষের চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। দ্রুত সড়ক থেকে গাছ সরিয়ে নেয়ার দাবী জানিয়েছেন শাহ জাহান মৃধা। এতে অন্তত অর্ধ কোটি টাকার ক্ষতি হবে বলে জানান কৃষি অফিসার। ভারী বৃষ্টিপাতে উপজেলার জনজীবন বিছিন্ন হয়ে পরেছে। পানিতে মাঠ-ঘাট থই থই করছে। সোমবার গভীর রাতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিছিন্্ন হয়ে বুধবার দুপুর ২ টা পর্যন্ত বন্ধ ছিল। ৩৬ ঘন্টা উপজেলাবাসী বিদ্যুত বিহীন অন্ধকারে ছিল। অপর দিকে পুজাখোলা গ্রামের ২৫ টি বড় ঘেরের মধ্যে আমির হোসেন, মোরসালিন, নুরুল ইসলাম মোল্লা, জাকির মোল্লা, রাসেল খাঁন, নাশির প্যাদা, হাফেজ প্যাদা, ওলি মৃধা, পল্টু মৃধা ও রাসেল হাওলাদারের মাছের ঘের তুলিয়ে গেছে।
বুধবার সরেজমিনে ঘুরে দেখাগেছে, আমতলী উপজেলা পরিষদের অভ্যন্তরের ৮ টি পুকুর ও তিনটি মাছের ঘের পানিতে তলিয়ে মাছ ভেসে গেছে। পরিষদের মধ্যে ১১ টি মুল্যবান গাছ মুলের মাটি আগলা হলে উপড়ে পরেছে। এছাড়া পৌর শহরের তীব্র জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। জলকপাট দিয়ে পানি নিস্কাশন হয়েও জলাবদ্ধতা কমছে না।
আমতলীর পুঁজাখোলা গ্রামের মাছ চাষী আমির হোসেন বলেন, তিন একর জমির মাঝের ঘেরের অন্তত ৫ লক্ষ টাকার মাছ ফেসে গেছে। তিনি আরো বলেন, এই এলাকা ২৫ টি ঘেরের মধ্যে ১০ টি ঘের পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে অন্তত ওই ঘেরে ৩০ লক্ষ টাকার ক্ষতি হবে।
গুলিশাখালী ইউনিয়নের কালিবাড়ী গ্রামের মোঃ জসিম উদ্দিন বলেন, বৃষ্টির পানিতে মাছের ঘের তুলিয়ে গেছে।
পশ্চিম সোনাখালী গ্রামের সোহেল রানা বলেন, পুকুর তুলিয়ে মাছ ফেসে গেছে। তিনি আরো বলেন, এই গ্রামের অন্তত ৫০ টি পুকুর তলিয়ে।
হলদিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া গ্রামের কৃষক শিবলী শরীফ বলেন, শুধু পানি আর পানি। চারিদিকে পানিতে থই থই করছে। বীজতলা পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে।
ঝিনুক কোয়াটারের শাহজাহান মৃধা বলেন, গাছ উপড়ে সড়কে পড়ে থাকায় চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। দ্রুত গাছ সরিয়ে নেয়ার দাবী জানান তিনি।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোসাঃ হালিমা সরদার বলেন, উপজেলায় ১২ হাজার পুকুর এবং এক’শ ৫০ টি মাছের ঘেরের অর্ধেক বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে মাছ ফেসে গেছে। এতে অন্তত কোটি টাকার ক্ষতি হবে।
আমতলী উপজেলা কৃষি অফিসার সিএম রেজাউল করিম বলেন, গত ২৪ ঘন্টার ভারী বৃষ্টিতে উপজেলায় ভয়াবহ জলাদ্ধতা দেখা দেয়ায় এক হাজার ৯’শ ২৯ হেক্টর আমনের বীজতলা এবং দশ হাজার ৫’শ হেক্টর আউশ ধানের ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। বৃষ্টিতে আউশ ধানের পরাগায়ন বন্ধ হয়ে ধান চিটা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তিনি আরো বলেন, বৃষ্টিপাত এভাবে চলতে থাকলে আমনের বীজতলা পঁচে কৃষকের বেশ ক্ষতি হবে।

Please Share This Post in Your Social Media




All rights reserved by Daily Shahnama
কারিগরি সহায়তা: Next Tech