বিজ্ঞপ্তি:
দৈনিক শাহনামার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। জাতীয়, রাজনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন সহ সকল সংবাদের সর্বশেষ আপডেট জানতে ভিজিট করুন www.shahnamabd.com

বৃষ্টিপাতের ঘাটতিতে দক্ষিণাঞ্চলের আমন, উৎপাদন লক্ষ্য অর্জনে অনিশ্চয়তা

বৃষ্টিপাতের ঘাটতিতে দক্ষিণাঞ্চলের আমন, উৎপাদন লক্ষ্য অর্জনে অনিশ্চয়তা

শামীম আহমেদ, ॥ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বৃষ্টিপাতের ব্যাপক ঘাটতি নিয়েই এবার বর্ষা মৌসুম শেষ হতে চলেছে। বৃষ্টির অভাবে দক্ষিণাঞ্চলের খাদ্য ফসল আমনের উৎপাদন নিয়ে কৃষকের মধ্যে এক ধরনের আতংকের সৃষ্টি হয়েছে।
সাথে বছর জুড়েই তাপমাত্রার পারদ স্বাভাবিকের উপরে থাকায় জনস্বাস্থ্যসহ পরিবেশে বিরূপ প্রভাব পরেছে। শরতের এ সময়েও দক্ষিণাঞ্চলে তাপমাত্রার পরদ ৩৫ ডিগ্রী সেলসিয়াসের কাছে রয়েছে। বৃহস্পতিবার বরিশালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের প্রায় তিন ডিগ্রী বেশী।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, গত জানুয়ারি মাস থেকেই দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টিপাতের ঘাটতি লক্ষণীয় ছিল। গত নয় মাসের মধ্যে শুধুমাত্র জুন মাসে এ অঞ্চলে স্বাভাবিক বৃষ্টি হলেও বছরের অপর আট মাসই কেটেছে কম বৃষ্টি নিয়ে। এমনকি আমনের ভরা মৌসুমের গত দুটি মাসেও বৃষ্টিপাতের পরিমান স্বাভাবিকের চেয়ে কম ছিলো।
ফলে আমনের জমিতে পর্যাপ্ত আদ্রতা নিয়ে কৃষকের মনে যথেষ্ট অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি আবহাওয়া বিভাগ থেকে চলতি মাসেও স্বাভাবিকের চেয়ে কিছু কম বৃষ্টিপাতের আগাম বার্তাও দেওয়া হয়েছে।
বিভাগীয় কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণাঞ্চলের এগারো জেলায় এবার প্রায় সাত লাখ ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে আমন আবাদের মাধ্যমে প্রায় ১৯ লাখ টন চাল উৎপাদন লক্ষ্য রয়েছে। আবাদ লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছানো সম্ভব হলেও বৃষ্টির অভাবে উৎপাদন কোন পর্যায়ে পৌঁছবে ইতোমধ্যে তা নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে।
বরিশাল আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত জানুয়ারি মাসে এ অঞ্চলে স্বাভাবিক ৮.৯ মিলিমিটারের স্থলে কোন বৃষ্টি হয়নি। ফেব্রুয়ারি মাসে স্বাভাবিক ২৭ মিলিমিটারের স্থলে বৃষ্টি হয়েছিল মাত্র এক মিলিমিটার। আর মার্চে ৫৭.১ মিলিমিটারের স্থলে মাত্র ০.৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। এপ্রিল মাসে বরিশাল অঞ্চলে ১৩২.৩ মিলিমিটারের স্থলে বৃষ্টিপাতের পরিমান ছিল পাঁচ মিলিমিটারেরও কম।
আবহাওয়া অফিসের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, জানুয়ারি মাসে শতভাগ এবং ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত বরিশাল অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমান ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ৯৯% কম। মে মাসে বরিশাল অঞ্চলে ২৬০ মিলিমিটারের স্থলে ১২৭.৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। যা ছিলো স্বাভাবিকের ৫১.১% কম। জুলাই মাসেও স্বাভাবিক ৪৩৩ মিলিমিটারের স্থলে বরিশাল অঞ্চলে বৃষ্টিপাত ছিল ৩৪৭.৮ মিলিমিটার। যা স্বাভাবিকের ১৯.৭% কম। অথচ এ সময়ে সারাদেশে গড় বৃষ্টিপাতের পরিমান ছিল স্বাভাবিকের ১৮.৬% বেশী। এমনকি আগস্ট মাসেও বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমান ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে কম। চলতি মাসেও আবহাওয়া বিভাগ থেকে তাদের দীর্ঘ মেয়াদী বুলেটিনে বরিশাল অঞ্চলসহ সারাদেশেই বৃষ্টিপাতের পরিমান স্বাভাবিকের কম হবার সম্ভানার কথা বলা হয়েছে।
বৃষ্টিপাতের এ ঘাটতি দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান দানাদার খাদ্য ফসল আমনের উৎপাদনে কি ধরনের প্রভাব ফেলে সে বিষয়ে নিবিড় নজরদারীর কথা জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের বরিশাল অঞ্চলের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা। কৃষিবিদ মামুনুর রহমান বলেন, কৃষকদের সাথে সার্বক্ষনিক যোগাযোগসহ তাদের সবধরনেরর কারিগরি পরামর্শ প্রদানের জন্য মাঠপর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা পরামর্শ দিয়ে আসছেন।

Please Share This Post in Your Social Media




All rights reserved by Daily Shahnama
কারিগরি সহায়তা: Next Tech