ভোলায় গ্রীস্মকালীন বারি হাউব্রিড টমেটো চাষ করে ব্যাপক ফলন পেয়েছেন কৃষকরা। খেতে সুস্বাদু হওয়ায় বাজারে ক্রেতাদের যেমন রযেছে চাহিদা তেমনি বাজার দামও রয়েছেন ভালো। তবে কৃষকরা বলছেন মাত্র ২ মাসে অধিক ফলন আসায় গ্রীস্মকালীন বারি হাইব্রিড-৪,৮,১০ ও ১১ চাষ করে লাভবান হচ্ছেন তারা।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এর সরেজমিন গবেষণা বিভাগ ভোলার অফিস সূত্রে জানা গেছে, কৃষি মন্ত্রনালয়ের অর্থায়নে বাংলাদেশে গী্রস্মকালীন টমেটোর অভিযোজন পরীক্ষা, উৎপাদন প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও কমিউনিটি বেসড পাইলট প্রোডাকশন গ্রোগ্রাম শীর্ষক কর্মসূচীর আওতায় বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এর সরেজমিন গবেষণা বিভাগ, ভোলা জেলা গত বছর পরীক্ষামূলভাবে তিনজন কৃষকদের দিয়ে বারি হাইব্রিড টমেটো চাষ করেন। পরীক্ষামূলক সফলতা পেয়ে এবছর ভোলা সদর, দৌলতখান ও চরফ্যাশন উপজেলার ১০ জন কৃষক ১ শ’ শতাংশ জমিতে এ জাতের টমেটো চাষ করেন।
ভোলা সদর উপজেলার উত্তর দিঘলদী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষক মোঃ মনির হোসেন জানান, আগে তিনি শীতকালীন টমেটো চাষ করে তেমন লাভবান হতেন না। এবছর ভোলার সরেজমিন গবেষণা বিভাগ থেকে তাকে বীজ, সার-ঔষুদসহ বিভিন্ন সহযোগীতা করায় তিনি ৩০ শতাংশ জমি প্রায় ১ লাখ টাকা খরচ করে বারি হাইব্রিড-৪,৮,১০ ও ১১ জাতের টমেটো চাষ করেছেন।
তিনি আরো জানা, এ পর্যন্ত ১ লাখ ৩০ হাজার টাকার টমেটো বিক্রি করেছি, আরো প্রায় এক থেকে দেড় লাখ টাকা বিক্রি করতে পারবো।
দৌলতখান উপজেলার উত্তর জয়নগর ২ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর জয়নগর গ্রামের কৃষক মোঃ জাহাঙ্গীর জানান, গ্রীস্মকালীন টমেটো বাজারে কেজি প্রতি আমরা ৬০/৭০ টাকা দামে বিক্রি করতে পারছি। এ টমেটোর ক্ষেতে পোকা-মাকড়ের আক্রমন কম হওয়ায় সার-ঔষুদ বেমি প্রায়োজন হয় না। এছাড়াও পোকা দমনের জন্য আমরা টেপ ব্যবহার করেছি। আমি আশা করছি আগামী বছর আরো বেশি জমিতে গ্রীস্মকালীন টমেটো চাষ করবো।
ওই এলাকার সাধারণ কৃষক মোঃ মিন্টু জানান, তাদের এলাকায় বারি হাইব্রিড জাতের টমেটো চাষ করে মনির হোসেন লাভবানের কথা শুনেছি। আমি আশাকরি আগামীতে এ জাতের টমেটো চাষ করবো।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট সরেজমিন গবেষণা বিভাগ ভোলার উর্দ্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা গাজী নাজমুল হাসান জানান, আমরা কৃষকদের গ্রীস্মকালীন টমেটো চাষে কৃষকদের বীজ, সার-ঔষুদসহ বিভিন্ন ধরণের সহযোগীতা করেছি। কৃষকরা টমেটো চাষ করে ব্যাপক লাভবান হচ্ছেন। এছাড়াও অনেক নতুন নতুন অনেক কৃষক বারি হাইব্রিড টমেটো চাষ করার আমাদের সাথে যোগাযোগ করছেন। আমরা আগামীতে আরো বেশি জমিতে ও বেশি কৃষকদের দিয়ে এ টমেটোর চাষ করাবো।
ভোলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবু মোঃ এনায়েত উল্লাহ জানান, নভেম্বর পর্যন্ত গ্রীস্মকালীন টমেটোর ক্ষেতে ফুল ফুটবে এবং নভেম্বরের শেষ পর্যন্ত তারা বিক্রি করে ভালো দামে পারবেন। এ টমেটো চাষে এবছর কৃষকদের যে অভিজ্ঞতা হয়েছে তা আগামীতে কাজে লাগিয়ে বেশি টমেটো চাষ করে বেশি পরিমাণ লাভবান হবে কৃষকরা।