নিউজ ডেস্ক:
ভোলায় পুলিশের সাথে স্থায়ীদের সংর্ঘষে গুলিবিদ্ধ ৬ জন কে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এর আগে ভোলার বোরহানউদ্দিনে ‘তৌহিদি জনতা’র সমাবেশ ঘিরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে পাঁচজন নিহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। আহত হন পুলিশসহ অর্ধশতাধিক মানুষ।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ফেসবুকে মহানবী (স.) নিয়ে কটূক্তি করার প্রতিবাদে রোববার বেলা ১১টায় বোরহানউদ্দিন হাইস্কুল মাঠে পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এতে অংশ নিতে উপজেলার প্রত্যেক ইউনিয়ন থেকে কয়েক হাজার লোক একত্রিত হয়ে ‘নবী অবমাননা’ ও ‘আল্লাহ-কে নিয়ে কটূক্তিকারীর ফাঁসি চাই’- এমন স্লোগান দিয়ে সমাবেশস্থলে আসেন। কিন্তু সমাবেশ শুরুর আগেই তা শেষ করতে তাগাদা দেন পুলিশ। একপর্যায়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে উভয়পক্ষ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ গুলি ছোড়ে। এতে সাংবাদিক-পুলিশসহ আহত হন অর্ধশতাধিক। আহতদের বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ভোলা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়।
বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুজনের মৃত্যু হয়। তারা হলেন- মিজান (৪০) ও মাফুজ পাটোয়ারি (৪৫)।
পরে ভোলা সদর হাসপাতালে নেয়ার পরে মাহবুব, শাহীন এবং গনি মারা যায়।
ভোলার সিভিল সার্জন রথীন্দ্রনাথ মজুমদার পাঁচজন নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুজনের মরদেহ এবং সদর হাসপাতালে নাম না জানা এক ব্যক্তির মরদেহ রাখা হয়েছে।
এ ঘটনার সংবাদ সংগ্রহ ও ছবি তুলতে গিয়ে আহত হন স্থানীয় প্রতিনিধি।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সেখানে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আহতদের নাম পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
ভোলা জেলা পুলিশ সুপার সরকার মো. কায়সারও তিনজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, অনুমতি ছাড়াই তারা সমাবেশ করতে চেয়েছিল। আমরা তাদের দ্রুত শেষ করতে বলি। কিন্তু তারা কথা না শুনে উল্টো আমাদের ওপর হামলা চালায়। একপর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গুলি ছুড়তে বাধ্য হই আমরা।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বোরহানউদ্দিনে বিপ্লব চন্দ্র শুভ নামের এক যুবক শুক্রবার বিকেলে নিজ ফেসবুক আইডি থেকে কয়েকজনের সঙ্গে মেসেঞ্জারে আল্লাহ ও রাসূল (স.)-কে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। একপর্যায় কয়েকটি আইডি থেকে ম্যাসেজগুলোর স্ক্রিন শর্ট নিয়ে ফেসবুকে কয়েকজন প্রতিবাদ জানালে বিষয়টি সকলের নজরে আসে। পরবর্তীতে ফেসবুকজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে।
এ অবস্থায় সন্ধ্যার পর বিপ্লব চন্দ্র বোরহানউদ্দিন থানায় আইডি হ্যাক হয়েছে মর্মে জিডি করতে আসলে থানা পুলিশ বিষয়টি তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে হেফাজতে রাখেন। ওই ঘটনার প্রতিবাদে রোববার বেলা ১১টায় বোরহানউদ্দিন হাইস্কুল মাঠে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেয় ‘তৌহিদি জনতা’র ব্যানারে স্থানীয়রা।