নিজস্ব প্রতিবেদক:
সবুজ শ্যামলীময় ঘেরা অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাক্ষেত্র পর্যটকদের উপহার দেয়ার মতো চরফ্যাশন প্রচুর আকর্ষণী স্থান রয়েছে চরফ্যাশনে। তার মধ্যে চরফ্যাশন শহরে অবস্থিত জ্যাকব টাওয়ার, শেখ রাসেল শিশু পার্ক ও বিনোদন কেন্দ্র, ফ্যাশন স্কয়ার, খামারবাড়ি, বিচ্ছিন্নদ্বীপ ঢালচরের তারুয়া সমুদ্র সৈকত(বালির দ্বীপ) ও কুকরি-মুকরি পাখিদের অভয়ারণ্যখ্যাত, লাল কাঁকড়ার বিচরণ মনকাড়ারমত দৃশ্য পর্যটকদের উপচে পড়া ভীড় জমেছে।
শুক্রবার সরকারি ছুটির দিনে সকাল থেকে জ্যাকব টাওয়ার ও ফ্যাসন স্কয়ারে পর্যটকদের ভীর দেখা গেছে নজর কাড়ার মত। বেলা ১১টায় ঢাকা থেকে আগত পর্যটক আলী হোসেন বলেন, আমাদের দেশে এত সুন্দর দৃষ্টিনন্দন রয়েছে তা না দেখলে বিশ্বাস করতাম না। আজ আমি খুবই আনন্দিত।
বরিশালের ঝালকাটি থেকে আসা ১০ কলেজ ছাত্রীর মধ্যে রোকসানা আক্তার ঝুমুর রলেন, আমাদের কলাপড়ার কুয়াকাটার চেয়ে সুন্দর এই পর্যটক এলাকা চরফ্যাশনের জ্যাকব টাওয়ার ও শেখ রাসেল বিনোদন ও শিশু পার্ক। আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মন্ত্রী ওবাদুল কাদের এমপি চরফ্যাশন এসে উন্নয়ন আর সৌন্দর্য্য দেখে মুগ্ধ হয়ে বলেছেন দেখতে হলে সৌন্দর্য্য আর উন্নয়ন ঘুরে আসুন জ্যাকব এর নির্বাচনী এলাকায় চরফ্যাশন।
পরিবার উন্নয়ণ সংস্থার সমন্বয়কারী বাবু শংকর চন্দ্র দেবনাথ বলেন, পর্যটন নগরী“চর কুকরি মুকরিতে কমিউনিটি ভিত্তিক ইকো-ট্যুরিজম অতিদরিদ্র সদস্যদের মাঝে পর্যটকদের ভ্রমন উপযোগী ১০টি রঙিন নৌকা, ১০টি রেস্টিং বেঞ্চ ১টি ঘাট, ভাসমান দোকানসহ অন্যান্য উপকরন দেখা যায়।
পর্যটকদের উপচেপড়া ভীড় মনকাড়া স্থানে যে যার মত অবস্থান করায় লাল কাকড়া গুলো সুন্দর ভাবে দেখা যায়। এ কুকুরি মুকরির চরটিতে পাখিরাও স্বস্তিতে বিচরণ করেছে। বনের গাছ গুলোতে পাখিরা বিতরণ করেছেন। প্রাকৃতিক জীব বৈচিত্রের পাশাপাশি পাখিদের অভয়ারণ্য রক্ষায় এ চরটিতে পর্যটকের ভ্রমনে সরকারি ভাবে রয়েছে অনেক সুযোগ সুবিধা।
ফলে অস্কুরেই প্রকৃতির আরেক সৌন্দর্য তারুয়া সমুদ্র সৈকত নৈসর্গিক দৃশ্য হারাতে বসেছে পুরো বাংলাদেশের মানুষ। পর্যটকরা চরটিতে গিয়ে যে যার মত সৌন্দর্য উপভোগ করেছে পর্যটকগন। শুক্র শনিবারে সরকারি ছুটির দিন গুলোতে বিভিন্ন স্থান থেকে আসা দর্শনার্থীদের ভীড়ে ভরে যায় দর্শণীয় স্থান গুলো। অনেক সময় তিল রাখার ঠাই হয়না জ্যাকব টাওয়ার ও শেখ রাসেল বিনোদন পার্কে।
পাখিরা নির্বিঘ্নে বিচরণ কিংবা অবস্থান করতে পারায় তারুয়া সৈকতে অপূর্ব দৃশ্য সৌন্দর্যের প্রতীক। সম্প্রতি পিকেএসএফ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ (প্রাক্তন সিনিয়র সচিব) এবং উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ ফজলুল কাদের, চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রুহুল আমীন, এফডিএ-এর নির্বাহী পরিচালক মো: কামাল উদ্দিন এবং চর কুকরি মুকরি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল হাসেম মহাজন এফডি এর সমন্বয়কারী বাবু শংকর চন্দ্র দেবনাথ
১৯৬৫সাল থেকে জেগে উঠা চরফ্যাশন শহর থেকে প্রায় ৩৫কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অভ্যন্তরে বিচ্ছিন্ন এ চরটি ঢালচর ভেঙ্গে পুর্ব ঢালচর হিসাবে পরিচিত হলেও স্থানীয় সাংসদ আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব ঘুরতে এসে এটি সৌন্দয্যে দেখে এটির নাম করন করেন “তারুয়া সমুদ্র সৈকত”(বালিরদ্বীপ)।
” চরটি সৌন্দর্য্য ব্যাপক আলোড়ন ছড়িয়ে পরলে স্থানীয় ব্যবসায়ী পর্যটক দর্শনার্থীদের ভ্রমনে নিয়ে যেতে শুরু করেন। সবুজ শ্যামল সিগ্ধা প্রকৃতি আর মানুষের বন্ধুসুলভ আচরণ ও আতিথেয়তা পর্যটকদেরে হাতছানি দিয়ে ডাকছে। পর্যটকরা কাছ থেকে ছবি তোলা বিধি নিষেধ না থাকায় সৌন্দর্য্য বন্ধন হারিয়ে যেতে বসেছে। পরিবেশ বিজ্ঞানীদের মতামত পাখি কিংবা কাঁকড়া তাঁদের মতো কওে তাদেরকে থাকতে দিতে হয়।
সরকার পরিকল্পিতভাবে ট্যুরিস্ট ভ্রমনের উপযোগী হিসেবে ঘোষণা করেছেন আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব এমপি। ওই ঢালচর ইউপি চেয়ারম্যান আবদুস সালাম হাওলাদ বলেন, সারা বছরেরই পর্যটকরা তারুয়া সমুদ্র সৈকত যায়। শীত শেষে হলেও পর্যটদের ভীরে মুখোরিত থাকে এই চরটিতে।
আমি নিরাপত্তার স্বার্থে ওই স্থানে একটি ঘর করে ব্যক্তি উদ্যোগে একজন বেতন ভুক্ত লোক রেখে পর্যটকদের থাকার সুযোগ সৃষ্টি করছি। কমপক্ষে তারা এখানে এসে ভয় যাতে না পায়। সরকারের পক্ষ থেকে পর্যটন এলাকা ঘোষনা দিয়ে প্রশাসনের ব্যবস্থা করা একান্ত দরকার। দেশ-দেশান্তর থেকে এই তারুয়া সৈকতে পর্যটকেরা ঘুরতে আসে।
পর্যটকেরা এক গেলে বার বার আসতে মন চায়। চারদিকে যতদুর চোখ যায় শুধু সাগরের অথৈ জলরাশি। তারই মাঝখানে নয়ন ভোলানো এই বিশাল চর। যেন কুয়াকাটা ও কক্সবাজারকে হার মানায়। লাল কাঁকড়া দৌড়াদৌড়ি,পাখির জাঁক সাগরের ঢেউ এক স্মৃতিময় মনকাড়া সুন্দরের দৃশ্য।
আবার মানুষের পদচারণায় মুহুর্তেই কাঁকড়াদের গর্তে লুকানো। অনুমানিক দক্ষিণ থেকে দৈর্ঘ্য দেড় থেকে দুই কিলোমিটা পশ্চিম থেকে পূর্বে প্রস্থ্য প্রায় ১কিলোমিটার। আবার ১ থেকে দেড় কিলোমিটার নদীর পর আবার বিস্তিত এলাকা নিয়ে আরেকটি চর জেগে উঠেছে।
ঢালচরের ইউপির চেয়ারম্যান সালাম হাওলাদার বলছে, সকল চরগুলো বনবিভাগের দখলে রয়েছে । যদি গভীর থাকতো তাহলে জেলেদেরকে কোন দিন ওই সৈকত থেকে ফিরাতে পারতো না। চর কুকরী-মুকরী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল হাসেম মহাজন বলেন, শীত মৌসুমে ভোলার এই দ্বীপে বিভিন্ন প্রজাতির পরিযায়ী পাখি আসে।
এসব পাখির মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিচরণ করে কুকরী-মুকরী ইউনিয়নের বিভিন্ন পয়েন্টে। তাই পর্যবেক্ষকরা খুব কাছে থেকে যাতে পাখি দেখতে পারেন সে জন্য পাখি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে । তিনি আরও বলেন, তাছাড়া কুকরী-মুকরী ইউনিয়নকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সৌন্দর্য বাড়াতে নানা প্রজাতির গাছও লাগানো হয়েছে।
চরফ্যাশন পৌর সভার নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম হাসান বলেন, ১৮তলা বিশিষ্ট ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে জ্যাকব টাওয়ার নিমাণ করা হয়েছে। পাশে রয়েছে শেখ রাসেল বিনোদন কেন্দ্র ও শিশু পার্ক। ঢাকার শ্যামলী শিশু মেলা যে রাইটস রয়েছে চরফ্যাশনেও সে রাইটস রয়েছে। বন্ধের দিন গুলোতে সকাল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত রয়েছে পর্যটকদের পথচারনা।