নিজস্ব প্রতিবেদক:
সরকারি নিষেধাজ্ঞা ও ভয়ভীতি উপেক্ষা করে ঝুঁকি নিয়ে ফেরি, নৌকা ও ট্রলারে হাজার হাজার মানুষ বুধবার দ্বীপ জেলা ভোলায় প্রবেশ করেছে। গণপরিবহন বন্ধ ঘোষণার পরও সকালে কনকচাঁপা ফেরি লক্ষ্মীপুরের মজু চৌধুরীর ঘাট থেকে অন্তত সাত হাজার মানুষকে ভোলার ইলিশা ঘাটে নিয়ে যায়। এর পর দিনভর ছোট-বড় ২০টি নৌকা-ট্রলারে আরও প্রায় ১০ হাজার যাত্রী ভোলায় ফেরে। এতে ভোলা-ইলিশা সড়কে মানুষের ঢল নামে।
দূর-দূরান্ত থেকে ঘরেফেরা এসব মানুষের ভাইরাস প্রতিরোধের ব্যবস্থা ছিল না। এমনকি অধিকাংশকেই দেখা গেছে মাস্কবিহীন। হাতে ছিল না গ্লাভসও। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে একা চলার পরিবর্তে এদের উৎসব আমেজে গন্তব্যে ছুটতে দেখা গেছে। এমন অবস্থায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন স্থানীয়রা।
গণপরিবহন ও দোকানপাট বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে ঘরেফেরা এসব মানুষকে। ২০ টাকার পথ পাড়ি দিতে ২০০ টাকা খরচ করেও পাওয়া যায়নি প্রয়োজনীয় যানবাহন। অন্যদিকে, দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা যাত্রীদের নিয়ন্ত্রণে ঘাটগুলোয় কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ দেখা যায়নি। ছিল না আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতাও। সরকারি ছুটি ঘোষণায় ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন শহরে নানা ভোগান্তির কারণে তারা স্বজনের কাছে ফিরছেন বলে ক’জন যাত্রী জানন।
কনকচাঁপার মাস্টার আজিজুর রহমান জানান, রাত ৩টায় তার ফেরিটি মজু চৌধুরীর ঘাটে ভিড়তে না ভিড়তেই হাজার হাজার যাত্রী উঠে পড়েন। নিরুপায় হয়ে বাস-ট্রাকের পরিবর্তে ওই যাত্রীদের ইলিশা ঘাটে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন মজু চৌধুরীর ঘাটে আরও ১০ হাজার যাত্রী ভোলায় ফেরার অপেক্ষায় ছিল।
কয়েক যাত্রী জানান, তারা ঢাকায় মেসে থাকেন। ওইখানে হোম কোয়ারেন্টাইনের সুযোগ-সুবিধা নেই। তাই বাড়ি ফিরতে বাধ্য হয়েছেন। তারা বলেন, এ পরিস্থিতির সুযোগ নিয়েছেন দুই পাড়ের ঘাটের লোকজন। তারা সিন্ডিকেট করে ১০০ টাকার ভাড়া আদায় করেছেন তিন থেকে ৫০০ টাকা করে।
দুপুরে ইলিশা ঘাট পরিদর্শন করেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান। তার উপস্থিতিতেই যাত্রীবোঝাই একাধিক ট্রলার ইলিশা ঘাটে ভেড়ে। পরিস্থিতি দেখার পর তিনি জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।